ছুটির দিনে কুয়াকাটায় আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরা
প্রকাশিত : ০৮:১৫ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ শুক্রবার
ছুটির-দিনে-কুয়াকাটায়-আনন্দে-মেতেছেন-পর্যটকরা
আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, দক্ষিণের নির্মল বাতাস, দরিয়ার অথৈ নীল জলরাশি। সৈকতের লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ, কুয়াকাটার এমন নান্দনিক রূপ পর্যটকরা উপভোগ করছেন মুগ্ধ নয়নে।
কেউ আবার সেল্ফি তুলে স্মৃতিটুকুকে বাঁচিয়ে রাখছেন মুঠোফোনের ইলেক্ট্রিক স্মৃতি কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভার্চ্যুয়াল ক্যানভাসে। কেউ আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন অসীম সাগরের সীমাহীন মনকাড়া রূপ।
স্থানীয়রা জানান, আগের তুলনায় পর্যটকের উপস্থিতি অনেকটা বেড়েছে। কুয়াকাটার কুয়া, সৈকতের লেম্বুরবন, গঙ্গামতির লেক, লাল কাঁকড়ার চর, মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ বিহার, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন পল্লীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখছেন পর্যটকরা। থেমে নেই সৈকতে ফটোগ্রাফার ও ঘোড়ার দৌড়। আবার আনেকেই সৈকতের দোকানগুলোতে কাঁকড়া, চিংড়িসহ নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছের ফ্রাই ও বার-বি-কিউ উপভোগ করছেন। এছাড়া ফুচকা চটপটির দোকান গুলোতেও ভিড় লেগে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, আগে ফেরি পার হয়ে ঢাকা থেকে সড়কপথে কুয়াকাটায় যেতে সময় লাগতো ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা। এখন পদ্মা সেতু চালু হয়েছে,আর সেই ভোগান্তিও কমেছে। মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে এখানে আসা যায়। তাই ভ্রমন পিপাসুরা কুয়াকাটাকেই বেছে নিয়েছেন।
সৈকত লাগোয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই আগের তুলনায় বেশি পর্যটক আসতে শুরু করেছে। তাই বেচা বিক্রিও বেড়ে গেছে। তবে সরকারি ছুটি কিংবা বিশেষ কোন দিনে পর্যটক বেশি থাকে।
পর্যটকরা বলেন, এর আগেও কুয়াকাটা এসেছি। তখন বেশ কয়েকটি ফেরি পার হয়ে এখানে আসতে হতো। তখন অনেক বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে। এবারে মাত্র ৬ ঘণ্টায় কুয়াকাটা আসলাম। হোটেলে কিছুটা সময় বিশ্রাম নিয়ে সৈকতে বেরিয়ে পড়েছি। ঘুরে দেখলাম বিভিন্ন দর্শনীয় স্পট। পর্যটক সবুজ শিকদারও বললেন, কুয়াকাটা হলো আমার প্রিয় একটি স্থান। তাই ছুটি পেলেই বারবার এখানে ছুটে আসি।
হোটেল গোল্ডেন ইন কুয়াকাটা এর স্বত্তাধিকারী মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, দূর্গা পূজা ও সাপ্তাহিক ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। আমাদের হোটেলের সবকটি রুম বুকিং হয়েছে গেছে। এখনও পর্যটকরা অনলাইনে কিংবা ফোনে বুকিং করছেন।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কুটুম’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন,পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সাপ্তাহিক ছুটিসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকের আগমন বেশি হচ্ছে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমএ মোতালেব শরিফ বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর কুয়াকাটার ভাগ্য ফিরেছে। টানা লম্বা ছুটিগুলোতে পর্যটকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। আমরা আগত পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
মহিপুর থানা ওসি খোন্দকার মো. আবুল খায়ের বলেন, প্রতিদিনই থানা পুলিশের একটি টিম পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থানা পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আ. খালেক জানান, পর্যটক সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ মাঠে কাজ করছে।