কমলা চাষে আশুতোষের বাজিমাত
প্রকাশিত : ০৫:১৫ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ শুক্রবার
কমলা-চাষে-আশুতোষের-বাজিমাত
ইউটিউব দেখে অনেকটা শখ করে তিনি নিজের ৩৩ শতাংশ জমিতে করেছেন কমলার চাষ। অত্যন্ত নিবিড় পরিচর্যা ও যত্নের সঙ্গে তিনি গাছগুলোকে বড় করেছেন।
সরেজমিন মধুপুর গ্রামে গিয়ে কথা হয় শিক্ষক আশুতোষ বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, কমলা চাষের ইউটিউব ভিডিও দেখে ২০১৯ সালে মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে একটি নার্সারি থেকে চায়না জাতের ৬৫ চারা গাছ সংগ্রহ করেন। এরপর তাদের পরার্মশে নিজের ৩৩ শতাংশ জমি চাষের উপযোগী করে রোপণ করেন কমলার চারা। চারা রোপণের পর গাছের পরিচর্যা বাড়ান তিনি। নিয়মিত জৈব সার এবং তার পাশাপাশি সকাল-বিকেল দেখভাল করেন চারা গাছগুলোর। ১ বছর পর তার ৬২টি চারা গাছ বেঁচে যায়।
এ সময় তিনি আরো নিবিড়ভাবে পরিচর্যা করতে থাকেন। ২ বছর পর চারা গাছগুলো একটু বড় হলে তিনি আগাছা পরিষ্কার করে গাছের প্রতি আরো যত্নশীল হন। ২ বছর ৬ মাস পর গাছে ফুল আসলে তিনি স্প্রে প্রদর্শন করেন। ১ মাস পর গাছে ফুল থেকে ফল আসতে শুরু করলে তিনি প্রতিটি গাছে নিয়মিত পানি দেওয়া শুরু করেন। ধীরে ধীরে ফল বড় হতে থাকে। ৩ বছর পূর্ণ হলে তার ৫০টি কমলা গাছে পরিপূর্ণ কমলায় রূপান্তরিত হয়। প্রথমে কমলা সবুজ আকার ধারণ করলেও তারপর সপ্তাহখানেক পর হলুদ বর্ণের হয়। বর্তমানে প্রতিটি কমলার গাছে হলুদ-সবুজ কমলা ঝুলছে। কমলার বাগান দেখতে নিজ গ্রামবাসীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন।
তিনি আরো জানান, আমার কমলা বাগানে এখন ৫০টি গাছে পরিপূর্ণ কমলা এসেছে। আমি বাণিজ্যিক ভিত্তিতেএগুলো বিক্রি করতে চাই। কমলার প্রতিটি গাছে ১২-১৫ করে কমলা ধরেছে। আমার বাগানের এ কমলাগুলো খেতে খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুন সম্পন্ন। কমলা গাছগুলো বড় করতে আমার ৩ বছর পরিচর্যা করতে হয়েছে। নিয়মিত জৈব সারের পাশাপাশি অন্যান্য খরচ বাবদ ১ থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমি একজন কলেজ শিক্ষক। নিজে সময় দিতে পারি না। তাই বাগান দেখাশুনা ও পরিচর্যার জন্য আরো ৩ জন শ্রমিক কাজ করে এখানে। এ বাগান থেকে আমি এবার ৩-৪ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করবো বলে আশা রাখি।
এরমধ্যে মাগুরাসহ পার্শ্ববর্তী অনেক জেলার ব্যাপারী আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে কমলাগুলো গাছ থেকে তুলবো। এসব কমলার গাছ থেকে নিজে প্রায় ২ হাজার চারা তৈরি করেছি। যার প্রতিটি চারা গাছ এখন বিক্রি করছি ১৫০ টাকায়। এসব চারা কিনতে দূর-দূরান্তের মানুষ ভিড় করছেন বাগানে। আগামীতে কমলার পাশাপাশি অন্যান্য মিশ্র ফলের বাগান করার ইচ্ছা আছে আমার।
জেলার কৃষি বিভাগ বলছে, কমলা চাষের জন্য মাগুরার মাটি তেমন ভালো নয়। সাধারণত পাহাড়ি অঞ্চলে এ চাষ ভালো হয়। তবে জেলায় কিছু কিছু জায়গার মাটি খুবই ভালো। আমরা শুনেছি, আশুতোষের একটি কমলার বাগান রয়েছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে কমলার চাষে সাফল্য আসে। আমরা এ চাষে তাকে উৎসাহ দিচ্ছি। পাশাপাশি জেলার অন্যান্য কৃষকরা যদি এ চাষ করে তাহলে আমরা যথাযথ পরামর্শ প্রদান করবো।