৫ স্বজন হারালেও বেঁচে ফেরেন অর্পিতা, থামছে না আহাজারি
প্রকাশিত : ০৪:১৫ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ বুধবার
৫-স্বজন-হারালেও-বেঁচে-ফেরেন-অর্পিতা-থামছে-না-আহাজারি
কিন্তু নৌকা অপরপ্রান্তে পৌঁছানোর আগেই তলিয়ে যায় মাঝ নদীতে। এ ঘটনায় মৃত্যুপুরী হয় করতোয়ার পাড়। লাশের সারিতে যুক্ত হয় তার ৫ স্বজন। তবে বড় বোন আলো রানীসহ অলৌকিকভাবে বেঁচে ফিরেন অর্পিতা। কিন্তু বেঁচে ফিরেও থামছেনা তার আহাজারি।
জানা গেছে, মৃত অর্পিতা রানী জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউপির আরাজি শিকারপুর এলাকার হেমন্ত রায়ের মেয়ে। অর্পিতা স্থানীয় বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।
বুধবার সকালে অর্পিতাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মৃতদের শ্রাধ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন চলতে। তবে শোকের মাতম চলছে পুরো বাড়ি জুড়ে। থামছেনা কান্নার রোল। একদিকে সেদিনের ঘটনার আতঙ্ক, অপরদিকে স্বজন হারানোর বেদনায় অর্পিতার আহাজারি আর দীর্ঘশ্বাসে ভারি হয়ে ওঠেছে আকাশ-বাতাস। হু হু করে অনবরত কান্না ছাড়া আর কিছুই বলছেনা সে। এদিকে, স্ত্রী-সন্তান আর দুই নাতনি হারিয়ে কান্না থামছেনা অর্পিতার বাবা হেমন্ত রায়েরও। সমবেদনা জানাতে এসে নিস্তব্ধ প্রতিবেশিরাও।
হেমন্ত রায় জানান, খুব আনন্দ উদ্দীপনা নিয়েই তার স্ত্রী কবিতা রানী, বড় মেয়ে আলো রানী, মেঝ মেয়ে অর্পিতা, ছোট মেয়ে শ্যামলী রানী, ছোটভাই বাসুদেবের বউ রুপালি রানী, বাসুদেবের মেয়ে নন্দিনী এবং নাতনি জয়া রানী ও জ্যোতি রানী বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া ধর্মসভার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু নদী পার হতে গিয়ে ম্লান হয়ে যায় সব আনন্দ। নৌকাডুবির ঘটনায় তার দুই মেয়ে এবং ভাতিজি বেঁচে ফিরলেও লাশ হয়ে ফিরেছে ৪ জন। এখনো নিখোঁজ রয়েছে নাতি জয়া রানী।
হেমন্ত রায় বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গোৎসব। আর মহালয়া দিয়ে এই উৎসবের শুরু। কিন্তু উৎসবের প্রথম দিনেই হারিয়ে ফেললাম সারাজীবনের সব আনন্দ।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় বলেন, তদন্ত কমিটির সদস্যরা নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান, মরদেহ উদ্ধার এবং পরিবারকে বিভিন্ন সহায়তা প্রদানে সক্রিয় থাকায় তদন্ত প্রতিবেদনের সময় তিনদিন বাড়ানো হয়েছে।
নিহত প্রত্যেক পরিবারকে মরদেহ সৎকারের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজা টাকা করে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।