সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নতুন কৌশলে গঠনতন্ত্র প্রায় চূড়ান্ত জামায়াতের

প্রকাশিত : ০৩:০৫ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ বুধবার

নতুন-কৌশলে-গঠনতন্ত্র-প্রায়-চূড়ান্ত-জামায়াতের

নতুন-কৌশলে-গঠনতন্ত্র-প্রায়-চূড়ান্ত-জামায়াতের

ভিন্ন নামে রাজনীতি করতে চাইছে জামায়াতে ইসলামী। এজন্য নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনে কাজ করছে। এরই মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মীয় মূল্যবোধের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে যুক্ত করে নতুন দলের গঠনতন্ত্রের কাজ প্রায় শেষ করেছে দলটি। 

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর উত্তরের থানা আমিরদের এক বৈঠকে এ কথা জানানো হয়েছে। সেখানে উত্তরের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বলেন, ভিন্ন নামে জামায়াতের সংগঠন হবে। আইনজীবীরা নতুন গঠনতন্ত্র নিয়ে কাজ করছেন। তবে এখনই এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

এ ব্যাপারে অন্য নেতাদের সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেন তিনি। নতুন নামে ইসির নিবন্ধন না পেলে নিবন্ধিত কোনো দলে তারা মিশে যাবে। দলটির দায়িত্বশীল পর্যায়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে নতুন রাজনৈতিক দলের জন্য কয়েকটি নাম প্রস্তাব করা হলেও কোনোটিই এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের একটি থানার আমির বৈঠকের কথা স্বীকার করে বলেন, এ নিয়ে দলের দায়িত্বশীলরা কাজ করছেন। তবে ঢাকা মহানগর উত্তরের মজলিশে শূরা সদস্য ও হাতিরঝিল পশ্চিম থানার আমির মুহাম্মদ আতাউর রহমান সরকার বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

এ প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, যখন কোনো কিছু বলার মতো হবে, তখন অবশ্যই জানানো হবে। এটা তো গোপন কিছু নয়, হলে তো আমরা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েই করবো।

২০ দলীয় জোট নিয়ে সম্প্রতি জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান দলীয় ফোরামে বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ডা. শফিকুর রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা এতদিন একটা জোটে ছিলাম। এজন্য আপনারা হয়তো ভাবছেন, কিছু হয়ে গেছে নাকি? আমি বলি, হয়ে গেছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এটি একটি জোট ছিল। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর জোট তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। সেদিন বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল। সেটা আর ফিরে আসেনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াত যুদ্ধাপরাধীর দল হিসেবে অনেক আগেই পরিচিত। তাদের দলের অনেক নেতারই এ অপরাধে ফাঁসি হয়েছে। তাই তারা যে নামেই দল গঠন করে নির্বাচনে আসতে চায়। তা জনগণ মেনে নেবে না।

তারা আরো বলেন, জামায়াতের কাজ হচ্ছে কৌশলে তাদের দলে মেধাবীদের প্রবেশ করিয়ে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করা। এজন্য তারা যে নামেই আত্মপ্রকাশ করুক না কেনো তারা আর কোনো দিনই বাংলার রাজনীতিতে সুবিধা করতে পারবে না।

দলটির দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছিল, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী আছে, জোট ছাড়েনি। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর উত্তরের থানা আমিরদের বৈঠকে ভিন্ন নামে জামায়াতের সংগঠন করা হবে বলে জানানো হয়।

দলটির এক প্রভাবশালী নায়েবে আমির বলেন, নতুন দল মুক্তিযুদ্ধ, দেশ ও সমাজের সংস্কৃতিনির্ভর ধর্মীয় মূল্যবোধকে সামনে রেখেই কাজ করবে। আমরা দেশে ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতিফলন দেখতে চাই। তবে সেক্যুলার নয়।

নতুন দল যেকোনো সময়ে আত্মপ্রকাশের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে-এমনটি জানিয়ে এ নেতা বলেন, ‘পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর আত্মপ্রকাশ নির্ভর করছে।

জামায়াতের নতুন উদ্যোগ প্রসঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জামায়াত নতুন নামে আসতে চায় বা না চায় সেটা পরের কথা। তাদের প্রথম কাজ লুকোচুরি না করে একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া। এরপর চাইলে নতুন নামে রাজনীতি শুরু করতে পারে।