পুষ্টি বাগানে চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি আয়
প্রকাশিত : ০৬:১৫ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার
পুষ্টি-বাগানে-চাহিদা-মিটিয়ে-বাড়তি-আয়
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, যে সব কৃষকের বাড়ির আঙিনায় দেড় শতক জায়গায় রয়েছে এমন প্রান্তিক কৃষককে প্রকল্পের আওতায় এনে পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হচ্ছে। কৃষি অফিস প্রত্যেক কৃষককে বিনামূল্যে নানা প্রকারের সবজি বীজ, সার, ফলের চারা, বীজ সংরক্ষণের পাত্র, বাগানে পানি দেয়ার ঝাঁঝরিসহ অন্যান্য সব উপকরণ দিচ্ছে। সরকারি সহায়তা পাওয়ায় উৎসাহ নিয়ে কৃষকরা তাদের অনাবাদি জমিতে নানা রকমের মৌসুম অনুযায়ী সবজি আবাদ করে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা মেটাচ্ছেন।
কৃষকরা জানান, এসব বাগানে মৌসুম ভেদে চাষ হচ্ছে নানা রকমের সবজি। তাদের উৎপাদিত সবজির মধ্যে রয়েছে লাল শাক, পুঁই শাক, কলমি শাক, পালং শাক, ডাটা শাক মূলা, ধনিয়া ঘিমা, কলমি শাক, ঢেঁড়শ, বেগুন, ফুলকপি, বাধাকপি, মুলা, টমেটো, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে গাজরসহ নানা প্রজাতির সবজি ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় এ উপজেলায় ২০২০-২০২১ র্অথ বছরে পতিত জমি ও বসত বাড়ির আঙিনায় চলতি মৌসুমে পৌর শহরসহ উপজেলায় ১০৬ জন কৃষক এ বাগান স্থাপন করেন। এরই মধ্যে এসব বাগান থেকে শাকসবজি আহরণ শুরু করেছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, কৃষকদের বাড়ির আঙিনার খালি জায়গার মধ্যে নানা প্রজাতির সবজি শোভা পাচ্ছে। সবজি ক্ষেতে পুরুষদের পাশাপাশি বাড়ির গৃহবধূরাও কাজ করছেন। পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা মেটানোসহ বাড়তি আয়ে সবজি চাষ তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষকরা জানান, ফলন ভালো করতে প্রতিনিয়ত উপজলো কৃষি অফিস নানা ভাবে তাদেরকে পরামর্শ দিয়ে আসছে।
কৃষক মো. ফয়েজুল ইসলাম জানান, বাড়ির আঙিনায় কৃষি অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী মৌসুম অনুযায়ী গ্রীস্ম ও শীতকালীন মৌসুম ভেদে নানা প্রকারের সবজি চাষ করে আসছেন। পুষ্টি বাগান করতে সার ও বীজসহ অন্যান্য উপকরণ কৃষি বিভাগ থেকে তাদের বিনামূল্যে সহায়তা দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা সবাই মিলে বাগান পরিচর্যা করছেন। শুরু থেকেই তার এই সবজির বাগানে ভালো ফলন হচ্ছে। এখন আর সবজি কিনে খেতে হয় না। নিজেদের পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয়ভাবে বিক্রি করে তিনি ভালো টাকা আয় করছেন। এ জন্য তিনি কৃষি বিভাগকে ধন্যবাদ জানান।
গৃহিণী মর্জিনা বেগম জানান, কৃষি অফিসের সহযোগতিায় বাড়ির আঙিনায় তিনি নানা প্রকারের সবজি চাষ করেন। এরই মধ্যে বর্ষাকালীন সবজি তোলা হয়েছে। এতে তার ভালো ফলন হয়। পরিবারের সদ্যসরা মিলে তিনি এ সবজির বাগান করেন। গত কয়েক দিন আগে শীত মৌসুমের সবজি আবাদ করেন।
মো. তারা মিয়া জানান, এখন থেকে আর সবজি নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হয় না। নিজেদের উৎপাদিত টাটকা সবজি নিয়মিত খাচ্ছেন। তাছাড়া উৎপাদিত সবজি নিজেদের পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে বছরে ২৫-৩০ হাজার টাকার উপর বিক্রি করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। সে অনুযায়ী আমরা পারিবারিব সবজি ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে বসতবাড়ির আঙিনায় অনাবাদি ও পতিত জমিতে প্রকল্পের সহযোগিতায় উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে সবজি উৎপাদনে প্রচেষ্টা করছি। যে সমস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের দেড়শতক জায়গা রয়েছে তাদেরকেই এই আওতায় আনা হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারকে বিনামূল্যে নানা প্রকারের সবজি, বীজ, সার, ফলের চারা, নেট, বীজ সংরক্ষণরে পাত্রসহ অন্যান্য সব উপকরণ দেওয়া হয়েছে। এসব পেয়ে কৃষকরা সবজি চাষ করে পরিবারে নিয়মিত পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিক্রি করে বাড়তি আয়ও করছেন।