মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পুতিনের সিদ্ধান্তের ওপর চীনের প্রেসিডেন্ট শি’র প্রভাব!

প্রকাশিত : ০৫:৫০ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

পুতিনের-সিদ্ধান্তের-ওপর-চীনের-প্রেসিডেন্ট-শির-প্রভাব

পুতিনের-সিদ্ধান্তের-ওপর-চীনের-প্রেসিডেন্ট-শির-প্রভাব

ব্যাপক চাপ, হুমকি ও সমালোচনা উপেক্ষা করে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান সচল রেখেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার এই একরোখা সিদ্ধান্তের পেছনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রভাব দেখছেন রুশ প্রেসিডেন্টের সাবেক এক উপদেষ্টা।

পুতিনের সাবেক উপদেষ্টা আন্দ্রেই ইলারিওনভ জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে (ডিডব্লিউ) দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়েছেন।

ইলারিওনভের ধারণা, ইউক্রেনে আক্রমণ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে পুতিন যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার পেছনে চীনের প্রভাব রয়েছে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রুশ প্রেসিডেন্টকে সাম্প্রতিক ঘোষণাগুলো করতে বাধ্য করেছেন।

ডয়চে ভেলে ইলারিওনভের কাছে জানতে চেয়েছিল যে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন গত ২১ সেপ্টেম্বর টেলিভিশনে যে ভাষণ দেন, সে বিষয়ে তার ধারণা কী?

তখন আন্দ্রেই ইলারিওনভ বলেন, আমাদের বুঝতে হবে তিনি কেন সেই বক্তৃতা দিয়েছেন, কেন তিনি ইউক্রেনের অধিকৃত চারটি অঞ্চলে তথাকথিত ‘গণভোটের’ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কেনইবা তিনি ফের পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিতে শুরু করেছিলেন। এই সমস্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছিল ১৯-২১ সেপ্টেম্বর এই তিনদিনের মধ্যে। এই সমস্ত সিদ্ধান্ত পুতিন এখনও পর্যন্ত যে নীতি অনুসরণ করে চলেছেন এবং তার আগের যে পরিকল্পনা সেগুলোর বিরুদ্ধে যায়।

আরো পড়ুন>> ইউক্রেনে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদেরও ভোট নেয়া হচ্ছে

তিনি বলেন, উদাহরণস্বরূপ এ বছরের শেষের দিকে বা পরের বছর গণভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হয়েছিল। আকস্মিকভাবে, ক্রেমলিন আদেশ দিয়েছে যে তা অবিলম্বে করতে হবে। সেটা ভাষণের মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ২৩-২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এটি ক্রেমলিনের মানদণ্ডেও একটি ধোঁকা। তা ছাড়া এটি ২০১৪ সালে তথাকথিত ক্রিমিয়া গণভোটের মানদন্ডের দ্বারাও একটি প্রতারণা। আমাদের এই সমস্ত সিদ্ধান্তের জন্য একটি ব্যাখ্যা খুঁজে বের করতে হবে।

তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনি কি মনে করেন এই সিদ্ধান্তগুলো ক্রেমলিনের আতঙ্কের লক্ষণ? জবাবে ইলারিওনভ বলেন, ‘আমি সেখানে খুব একটা আতঙ্ক দেখছি না। আতঙ্ক কিসের কারণে।’

কারণ খারকিভে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ? পাল্টা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, খারকিভ ওব্লাস্টে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ পুতিনের সিদ্ধান্ত এবং চিন্তাধারার কোনো পরিবর্তনের কারণ বলে মনে হচ্ছে না। আমার একটা অন্যরকম অনুভূতি আছে। এই সমস্ত সিদ্ধান্ত ১৯-২১ সেপ্টেম্বর তিনদিনের মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মানে হল যে সেই সিদ্ধান্তগুলো ক্রেমলিন তার কমপক্ষে এক বা দুদিন আগে, মানে ১৭-১৮ সেপ্টেম্বর নিয়েছিল। কী হয়েছিল সেই তারিখে?

আরো পড়ুন>> ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়ান, বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা

তিনি বলেন, দেখে মনে হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ছিল সমরকন্দে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলন থেকে পুতিনের মস্কোতে প্রত্যাবর্তন। মনে হচ্ছে সেখানে পুতিনের কিছু কথোপকথন ছিল যা তাকে এই সমস্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিল।

সেখানে চেয়ারম্যান শি ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি পুতিনের সঙ্গে কথোপকথন করতে পারেন। তাই শি পুতিনকে এমন কিছু বলেছিলেন বলে মনে হয়, যা পুতিনকে যুদ্ধের প্রতি তার মনোভাব পরিবর্তন করতে, ‘গণভোটের’ জন্য তার আগের পরিকল্পনাগুলোকে আমূল পরিবর্তন করতে এবং পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের জন্য বাধ্য করেছিল।

আপনি কি অনুমান করতে পারেন শি পুতিনকে কী বলেছিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ইলারিওনভ বলেন, ‘আমরা জানি না। কিন্তু তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজের ওপর ভিত্তি করে অনুমান করা যায় যে, শি তার জুনিয়র পার্টনারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শেষ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।’