শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

করতোয়ার তীরে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি

প্রকাশিত : ১১:১৫ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

করতোয়ার-তীরে-দীর্ঘ-হচ্ছে-লাশের-সারি

করতোয়ার-তীরে-দীর্ঘ-হচ্ছে-লাশের-সারি

সম্পর্কিত খবর পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে মৃত বেড়ে ৫৬ পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি, মৃত বেড়ে ৫২ পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে মৃত্যু বেড়ে ৩২ পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় মরদেহ বেড়েই চলছে। উদ্ধার কার্যক্রমের তৃতীয় দিনের শুরুতে আরো ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে উদ্ধার হওয়া মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৬ জনে।

নৌকাডুবিতে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। তাদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার কাজ শুরু হয়।

দিনাজপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মন্জিল হক বলেন, ‘সকাল থেকেই উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল এবং নদীর পানি কমার কারণে মরদেহ উদ্ধার সম্ভব হবে।’ মরদেহ মাড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে রাখা হচ্ছে। সেখান থেকে পরিবারের কাছে হস্তন্তর করা হবে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সহযোগীতা করছেন স্থানীয়রাও।

সোমবার পর্যন্ত মৃত, নিখোঁজ ও হাসপাতালে ভর্তি ব্যক্তিদের মিলিয়ে হিসাব করলে ৯২ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে ওসি জানিয়েছেন, এর বাইরেও অনেক যাত্রী সাঁতরে ওই সময় তীরে উঠেছিলেন। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে নৌকাটিতে শতাধিক যাত্রী ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর অপর পাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজা উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। রোববার দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মালম্বীরা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে নদী পার হচ্ছিলেন।

ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে কতজন যাত্রী ছিলেন সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে স্থানীয়দের দাবি, তবে ৫০ থেকে ৬০ জনের ধারণক্ষমতার হলেও নৌকাটিতে যাত্রী ছিল শতাধিক। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নদীর মাঝপথে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেকে সাঁতার জানায় তীরে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা বিশেষ করে নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়। মনে করা হচ্ছে, স্রোতের কারণে অনেক মরদেহ পানিতে ভেসে যেতে পারে।

নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রী মাড়েয়া বামনপাড়া এলাকার সুবাস চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমিও নৌকায় ছিলাম। নৌকায় শতাধিক যাত্রী ছিল। আমরা নৌকায় ওঠার পরপরই নৌকায় পানি ঢুকতে শুরু করে। এ সময় মানুষজন নৌকার মধ্যেই হুড়োহুড়ি শুরু করেন। পরে যে পাশেই যাচ্ছিলাম, সে পাশেই নৌকায় পানি ঢুকছিল।

‘আমরা পাঁচজন বন্ধু ছিলাম। কোনো মতে সাঁতার কেটে প্রাণে বেঁচে যাই। অন্য যাত্রীরা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে বাঁচার আকুতি করছিল। তবে এত মানুষ মারা যাবে, তা বুঝতে পারিনি।’

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। ঘটনাস্থলে মারওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পুলিশ ছিল। তারা সবাই ওই নৌকায় এতো লোক উঠতে নিষেধ করেছিলেন।