মাহশা আমিনির সঙ্গে সেদিন যা করেছিল পুলিশ
প্রকাশিত : ০৭:৫০ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ রোববার
মাহশা-আমিনির-সঙ্গে-সেদিন-যা-করেছিল-পুলিশ
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো থেকে জানা যায়, পশ্চিম ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের সাক্কেজ শহরের পড়তে গিয়েছিলেন মাহশা। ১৩ সেপ্টেম্বর কুর্দিস্তান থেকে রাজধানী তেহরানে আসছিলেন তিনি। তেহরানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মাহশা দেখা করতে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন ভাই কিয়ারেশ আমিনিও।
কিয়ারেশ এবং মাহশা হাইওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় তেহরানের কিছু আগে তাদের পথ আটকায় টহলে থাকা পুলিশের দল। কিয়ারেশ-মাহশাকে গাড়ির কাচ নামানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশের নজরে পড়েন গাড়ির ভিতরে হিজাব না পরে বসে থাকা মাহশা। যেখানে দেশের সর্বোচ্চ নেতা বাড়ির বাইরে গেলে মহিলাদের হিজাব পরার নির্দেশ দিয়েছেন। গর্জে ওঠে পুলিশের দল।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাড়ির ভিতরে বসে থাকা ভাই-বোনের উপর হম্বিতম্বি শুরু করে দেয় পুলিশ। মাহশা হিজাব কেন পরেননি? বার বার একই প্রশ্ন করা হয়। মাহশার ‘দোষ’, তিনি প্রশ্নের জবাবে ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন। এরপরই রেগে আগুন হয় পুলিশের দল। হিজাব না পরার ‘শাস্তি’ হিসেবে গাড়ি থেকে টেনে নামানো হয় মাহশাকে। মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও তাকে টেনে হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলে হয়।
ভাই কিয়ারেশকে পুলিশ জানায়, মাহশাকে ‘সহবৎ’ শেখাতে কিছু সময়ের জন্য আটকে রাখা হবে। কিছুক্ষণ পরই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
ছাড়া পেয়েছিলেন মাহশা। তবে ছাড়া পেয়ে বাড়ি যাওয়ার পরিবর্তে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় তাকে। হাসপাতালে তিনদিন কোমায় থাকার পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান।
মাহশার মৃত্যুর পর থেকেই ইরানের রাস্তায় গণক্ষোভ শুরু হয়। হিজাব পোড়ানো থেকে শুরু করে মাথার চুল কেটে ফেলা- বিভিন্ন অভিনব পন্থায় প্রতিবাদে নামেন দেশটির বহু পুরুষ-নারী।
বিক্ষোভ সামাল দিতে সরকারের তরফ থেকে রাস্তায় পুলিশ নামিয়েও বিশেষ লাভ হয়নি। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলেছে ইট-পাথর। পোড়ানো হয়েছে পুলিশের গাড়িও। পুলিশের পাল্টা গুলিতে এরই মধ্যে মারা গেছে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ। তবে সরকারি হিসেবে নিহতের সংখ্যা ৩৫।