ভোট সংগ্রহে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন রুশ সেনারা
প্রকাশিত : ০৭:৫০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ শনিবার
ভোট-সংগ্রহে-মানুষের-দুয়ারে-দুয়ারে-যাচ্ছেন-রুশ-সেনারা
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) শুরু হওয়া এই ভোটের জন্য রুশ সেনারা ইউক্রেনীয়দের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
দক্ষিণ খেরসনে, রাশিয়ান সেনাদের সাধারণ মানুষের ভোট সংগ্রহের জন্য শহরের মাঝখানে একটি ব্যালট বাক্স বসিয়ে রাখতে দেখা গেছে। তবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাওয়ার বিষয়টিকে ‘নিরাপত্তাজনিত’ কারণ বলছে রাশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থাগুলো।
রাশিয়া-সমর্থিতরা শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার (২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর) লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া প্রদেশে গণভোটের ঘোষণা করে। যা ইউক্রেনের প্রায় ১৫ শতাংশ ভূখণ্ড বা হাঙ্গেরির আয়তনের সমান এলাকার প্রতিনিধিত্ব করছে।
রুশ বার্তা সংস্থা তাসের খবরে বলা হয়েছে প্রত্যেকের ভোট নেয়া হবে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
আরো পড়ুন>> রানি এলিজাবেথের চেয়েও বেশি ব্যয়বহুল হচ্ছে শিনজো আবের শেষকৃত্য
মেলিটোপোলের এক নারী বলেন, স্থানীয় দুই ‘সহযোগী’ দুজন রাশিয়ান সেনাকে সঙ্গে নিয়ে তার মা-বাবার ফ্ল্যাটে এসেছিলেন। সেনারা তাঁর মা-বাবাকে স্বাক্ষর করার জন্য একটি ব্যালট দেন।
ওই নারী আরও বলেন, ‘আমার বাবা (রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার জন্য) “না” দিয়েছিলেন। আমার মা কাছাকাছি দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং জিজ্ঞাসা করেছিলেন “না” ভোট দেওয়ার জন্য কী হবে? জবাবে সেনারা বলেছেন, “কিছু না”।’
ওই নারী জানান, রুশ সেনারা এখন তাদের ওপর অত্যাচার করবেন—এ-ই ভেবে তার মা এখন বেশ উদ্বিগ্ন। ওই নারী আরও বলেন, একজনের জন্য একটি ব্যালটের পরিবর্তে পুরো পরিবারের জন্য একটি ব্যালট দেওয়া হচ্ছিল।
বিবিসি জানিয়েছে, এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি তারা। তবে রাশিয়া দাবি করে আসছে, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় নির্বাচন সম্পন্ন হবে।
রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করতে আপাতত পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এবং দক্ষিণ ইউক্রেনের খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ায় গণভোট শুরু হয়েছে। গতকাল শুরু হওয়া এই ভোট চলবে পাঁচ দিন।
আরো পড়ুন>> মিয়ানমার সংকটে জাতিসংঘের ভূমিকায় হতাশ মালয়েশিয়া
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভোটাভুটির মাধ্যমে এসব অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর সেখানে হামলার ঘটনা ঘটলে মস্কো দাবি করতে পারবে, পশ্চিমাদের কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।
চলতি গণভোটের ফল রাশিয়ার পক্ষে গেলে ইউক্রেনের আরও ১৫ শতাংশ এলাকা এই ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত হবে। এর আগেও গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার ঘটনা ঘটে। সেটা ২০১৪ সালে।
সে বছর পুতিনের নির্দেশে প্রথমে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া। পরে সেখানে গণভোটের আয়োজন করা হয়। রাশিয়ার ওই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এবারও এই ভোটকে ‘অবৈধ ও ভাঁওতাবাজি’ আখ্যা দিয়েছে ইউক্রেন ও দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা।