সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঝটিকা কর্মসূচিতে সরকারকে চাপে রাখতে চায় জামায়াত

প্রকাশিত : ০৭:০৫ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

ঝটিকা-কর্মসূচিতে-সরকারকে-চাপে-রাখতে-চায়-জামায়াত

ঝটিকা-কর্মসূচিতে-সরকারকে-চাপে-রাখতে-চায়-জামায়াত

দলীয় জোট বিএনপির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই- মুখে এমনটি বললেও ঝটিকা কর্মসূচিতে সরকারকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে পরিচিত জামায়াত।

জামায়াতের কয়েকজন সিনিয়র নেতা দাবি করেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিএনপির সঙ্গে এ সম্পর্ক চুকে গেছে। এখন ২০ দল কার্যকর নেই বলেও তারা অভিমত দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবের চিত্র ঠিক উল্টো।

বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বিএনপি-জামায়াতের গোপন শলাপরামর্শ হচ্ছে, গোপন বৈঠকে তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছেন এবং কর্মসূচি প্রণয়ন দিচ্ছেন।

বিএনপি যেমন সারাদেশে ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি পালন করছে; তেমনি জামায়াত এখন ঝটিকা কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ কর্মসূচির খুব শিগগিরই শুরু হবে বলেও জানা গেছে।

জামায়াতের ঝটিকা কর্মসূচি হলো অনেকটা জঙ্গি আদলে, যে কর্মসূচির মাধ্যমে জামায়াত হঠাৎ করেই বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি মিছিল এবং জঙ্গি কর্মসূচি পালন করবে। যে কর্মসূচি গুলোর লক্ষ্য হলো ভাঙচুর এবং জনগণের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করা। এক ধরনের নাশকতামূলক এ কর্মসূচির ব্যাপ্তি হবে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের। এ সময়ের মধ্যে ব্যস্ত সড়কে, ব্যস্ত জনপদে জামায়াতের ক্যাডাররা ভাঙচুর এবং ত্রাস সৃষ্টি করবে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের এ কর্মসূচির লক্ষ্য হলো তিনটি। প্রথম লক্ষ্য হলো, জনগণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করা। দ্বিতীয়, এ কর্মসূচির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একটা বার্তা দেওয়া এবং তৃতীয় হলো- সরকারকে বিচলিত করা।

তারা বলেন, জামায়াতের এ ঝটিকা কর্মসূচি বিএনপির বর্তমান ঘোষিত কর্মসূচির বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। বিএনপি এবং জামায়াত যৌথভাবে এ কৌশল নির্ধারণ করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি মনে করছে তাদের একক কর্মসূচি যদি যাওয়া হয় সেই কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করা হয় এবং এ কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য আওয়ামী লীগ রাস্তায় নামে এবং কর্মসূচিগুলো পণ্ড করে দেয়। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার মিরপুর এবং বনানীতে এ ঘটনা ঘটেছে।

সূত্র আরো জানায়, এজন্য বিএনপিকে সহায়তা করার জন্য জামায়াত এ ঝটিকা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে।

জামায়াতের বিভিন্ন পকেট এলাকাগুলোতে ২৫ থেকে ৩০ জন ক্যাডার একত্রিত হবে এবং আকস্মিকভাবে একটি তাণ্ডব করে যে যেখানে পালিয়ে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ধরনের পরিকল্পনার কথা একাধিক  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এসেছে এবং তারা এ বিষয়টি নিয়ে সতর্ক অবস্থানে আছে।

তবে বিএনপির এখনো মূল লক্ষ্য হলো যেকোনো মূল্যে ঢাকাকে দখল করা এবং ঢাকায় কর্মসূচি পালন করা। আর এই কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যেই তারা এখন ঢাকাকে জামায়াত দ্বারা অস্থির করতে চাচ্ছে।

জামাতের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, তাদের প্রায় ৩ থেকে ৫ হাজার সশস্ত্র ক্যাডার ঢাকা শহরে অবস্থান করছে। এই সশস্ত্র ক্যাডাররাই সরকারের জন্য একটি বড় রকমের হুমকি হয়ে উঠতে পারে। যেহেতু সরকারের এখন সব মনোযোগ বিএনপির দিকে এবং বিএনপি কি ধরনের কর্মসূচি পালন করছে সেই কর্মসূচির দিকে লক্ষ রাখা। সে কারণে এখন জামায়াত তার আসল রূপ প্রকাশ করছে।

সূত্র আরো জানায়, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে জামায়াত তার সাংগঠনিক শক্তিকে বৃদ্ধি করেছে, ক্যাডারদের প্রশিক্ষিত করেছে এবং এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা এখন রাজপথে নামাতে চায় যেন সরকারকে চাপে ফেলা যায়। আর বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচির আলোকে জামায়াত সশস্ত্র কর্মসূচির মাধ্যমে পরিস্থিতিকে উত্তেজনাপূর্ণ করতে চায়।