হুমায়ূন আহমেদের চিত্রকর্ম আত্মসাৎ: স্বামীসহ রুমার বিরুদ্ধে সমন
প্রকাশিত : ১২:২০ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার
হুমায়ূন-আহমেদের-চিত্রকর্ম-আত্মসাৎ-স্বামীসহ-রুমার-বিরুদ্ধে-সমন
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ মামলার পুলিশ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে তাদের আগামী ২৫ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
২০২১ সালের ২৯ জুন একই আদালতে এ মামলা করেছিলেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সম্প্রতি ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে আদালতে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল করে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১২ সালে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য আমেরিকার নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় গিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। সেখানে ছেলে নিষাদকে নিয়ে বেশকিছু ছবি এঁকেছিলেন তিনি। ওই সময়ে রুমা চৌধুরী ও তার সাবেক স্বামী বই ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সাহার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়।
সেই সূত্রে হুমায়ূন আহমেদ প্রদর্শনীর উদ্দেশ্যে তার আঁকা ২৪টি ছবি তাদের দেন। যেগুলো ২০১২ সালের জুন মাসে রুমা চৌধুরীর জিম্মায় দেওয়া হয়। শর্ত ছিল প্রদর্শনী শেষে তারা ছবিগুলো হুমায়ূন আহমেদের কাছে ফেরত দেবেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রদর্শনীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে রুমা ও বিশ্বজিতের উদ্দেশ্য ছিল প্রাথমিকভাবে ছবিগুলো বিক্রি করে কমিশন লাভ করা এবং পরবর্তীতে ছবিগুলো আত্মসাৎ করা। এভাবে তারা বারবার হুমায়ূন আহমেদকে প্রস্তাব দিলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ছবিগুলো তিনি এঁকেছেন তার নিজের এবং পুত্র নিষাদের আনন্দের জন্য। বিক্রি করে অর্থ লাভের জন্য নয়। এসময় রুমা চৌধুরী গুজব রটান প্রদর্শনীর ২৪টি ছবির মধ্যে চারটি ছবি হারিয়ে গেছে।
মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর শাওন দেশে ফিরে আসেন। তিনি রুমা চৌধুরী ও বিশ্বজিৎ সাহার কাছে ছবিগুলো ফেরত চান। বারবার চাওয়া সত্ত্বেও তারা ছবিগুলো ফেরত দিতে টালবাহানা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে অভিনেতা ও তৎকালীন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তির সহায়তায় তারা ২০টি ছবি ফেরত দেন হুমায়ূন আহমেদের মা আয়েশা ফয়েজের জিম্মায়। এই ঘটনা ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের।
মঞ্জুরুল আজিম পলাশ গত ৩১ মার্চ তার ফেসবুক পেজে কুমিল্লায় লিংকবাংলা শিল্প প্রদর্শনীর বিজ্ঞাপন দেন। ১ থেকে ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীতে একটি ছবি ছিল হুমায়ূন আহমেদের আঁকা। যে ছবিটি হারিয়ে যাওয়া চারটি ছবির একটি বলে প্রতীয়মান হয়। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় রুমা চৌধুরীর যোগসাজশে তার স্বামী পলাশ ছবিগুলো অসাধুভাবে আত্মসাৎ করেছেন, যা দণ্ডবিধির ৪০৬/৪১১/৪২০/৩৪ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।