বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চীনকে ভয় পাচ্ছে তাইওয়ান?

প্রকাশিত : ০৪:৫০ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ শুক্রবার

চীনকে-ভয়-পাচ্ছে-তাইওয়ান

চীনকে-ভয়-পাচ্ছে-তাইওয়ান

তাইওয়ান ভূখণ্ডে একের পর এক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পদচারণায় ক্ষুব্ধ ছিল চীন। ক্ষুব্ধতার বহিঃপ্রকাশে তাইওয়ান প্রণালীতে দফায় দফায় সামরিক মহড়া পরিচালনা করে বেইজিং। এতদিন মার্কিন আশ্বাসে শান্ত থাকলেও  চীনকে নিজেদেরসহ বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি মনে করছে তাইওয়ান। কারণ সম্প্রতি উজবেকিস্তানে রাশিয়া ও চীনের প্রেসিডেন্টের বৈঠকের জেরে মন্তব্যটি করেছে স্ব-শাসিত দ্বীপ ভূখণ্ডটি। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ‘স্বৈরাচারীবাদের সম্প্রসারণ’ প্রতিরোধ করতে হবে বলেও মন্তব্য করে তাইওয়ান।- খবর এএফপির।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন। বৈঠকের পর ইউক্রেন প্রশ্নে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের জন্য চীনের প্রশংসা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

শি জিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত এ বৈঠকটি উজবেকিস্তানের সমরখন্দ শহরে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন বা এসসিও জোটের শীর্ষ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। এসসিও’র এ শীর্ষ সম্মেলনকে অনেকে পশ্চিমা বিশ্বের ন্যাটোর মতো জোটগুলোর প্রভাব মোকাবিলা করতে একটি পাল্টা জোট হিসেবে দেখছেন।

জোটে চীন ও রাশিয়া ছাড়াও আছে- ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, ইরান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলো। বর্তমান বিশ্বে ইউক্রেন যুদ্ধ ছাড়াও তাইওয়ান ইস্যুতে চীন ও পশ্চিমা দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এ সম্মেলনের ওপর ছায়া ফেলেছে। আর তাই বৃহস্পতিবার চীন ও রাশিয়ার দুই নেতার বৈঠকটি নিয়ে অনেকদিন ধরে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল। আর এ বৈঠকে পশ্চিমের বিরুদ্ধে নিজেদের কৌশলগত সম্পর্কের প্রশংসা করেছেন পুতিন-জিনপিং।

এএফপি বলছে, উজবেকিস্তানের শহর সমরখন্দে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে শি জিনপিং বলেন, পরাশক্তির ভূমিকা গ্রহণের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে প্রচেষ্টা চালাতে ইচ্ছুক’ তিনি। অন্যদিকে স্ব-শাসিত তাইওয়ানের ওপর চীনের দাবির প্রতি রাশিয়ার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন পুতিন। এ ভূখণ্ডটিকে বেইজিং তার নিজস্ব অঞ্চল হিসাবে বিবেচনা করে এবং একদিন এটি দখল করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে চীন।

দুই শক্তিশালী এ নেতার মধ্যে সম্পর্ক তাইপেইকে কার্যত আশঙ্কার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাইওয়ানের আশঙ্কা, শি জিনপিং হয়তো একদিন রাশিয়ার মতো করে প্রতিবেশীকে আক্রমণ করতে পারে। মূলত তাইওয়ানকে বশে আনতে দীর্ঘদিন ধরেই হুমকি দিয়ে আসছে চীন।

এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার এক বিবৃতি দেয় তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বকে অবমাননা করে আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে এমন মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার জন্য চীনের কমিউনিস্ট পার্টির স্বৈরাচারী সম্প্রসারণবাদী সরকারকে অনুসরণ করায় রাশিয়ার তীব্র নিন্দা করছে তাইওয়ান।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে করা কাজকে উস্কানিমূলক বলে আখ্যায়িত করছে রাশিয়া। এটি আন্তর্জাতিক শান্তি, স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার বিষয়ে চীনা ও রাশিয়ার কর্তৃত্ববাদী শাসকদের সৃষ্ট ক্ষতিকেই তুলে ধরে।

উল্লেখ্য, তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-সহ পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। অবশ্য তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং।