শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ৬ ১৪৩১   ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

লবিস্ট নিয়োগে বিএনপির ৩১ কোটি টাকা, মিলছে না হিসাব

প্রকাশিত : ০৬:০৫ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার

লবিস্ট-নিয়োগে-বিএনপির-৩১-কোটি-টাকা-মিলছে-না-হিসাব

লবিস্ট-নিয়োগে-বিএনপির-৩১-কোটি-টাকা-মিলছে-না-হিসাব

করোনার মতো বৈশ্বিক মহামারিতে জনগণ তো দূরে থাক, দলীয় কর্মীদের জন্যই কোনো টাকা খরচ করেনি বিএনপি। অথচ সেই সময় বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণার জন্য বিদেশি লবিস্টদের ৩১ কোটি টাকার বেশি দিয়েছে দলটি।

আমেরিকার লবিস্ট ফার্ম ‘একিন গাম্ফ’র সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের চুক্তির বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর এসব তথ্য প্রকাশ্যে আসে। এতে বিএনপির অর্থ পাচার এবং দেশবিরোধী কার্যক্রমের বিষয়টিও সামনে চলে এসেছে। তবে মিলছে না বিদেশি লবিস্ট নিয়োগে বিএনপির কোটি টাকার সূত্র।

বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের হিসাব পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ২০১১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত বিএনপির আয় ৩৪ কোটি ৬৬ লাখ ৭৯ হাজার ২৯৯ টাকা। একই সময়ে দলটির ব্যয় ২৮ কোটি ৪২ লাখ ২ হাজার ৬৮২ টাকা।

আয়ের খাত হিসেবে দেখানো হয়েছে- অনুদান, নির্বাচনি ফরম বিক্রি, প্রাথমিক সদস্য ফি। ব্যয়ের খাত হিসেবে দেখানো হয়েছে- কর্মচারীদের বেতন-বোনাস, নির্বাচনী ব্যয়, জাতীয় সম্মেলন, সম্পদ ক্রয় ইত্যাদি।

বিএনপির গত ১০ বছরের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে লবিস্ট নিয়োগের পেছনে ব্যয়ের কথা উল্লেখ নেই। অথচ সম্প্রতি চুক্তির তথ্য ফাঁসের পর লবিস্ট নিয়োগের কথা স্বীকার করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার স্বীকারোক্তি অনুসারে- তিনটি আমেরিকান লবিস্ট ফার্মকে দেশবিরোধী প্রচারণার জন্য ৩১ কোটি ২৮ লাখ টাকা দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু সেই টাকা কিভাবে গেলে, কোন ফান্ড থেকে গেলে তার কোনো হদিস নেই।

ফাঁস হওয়া চুক্তিগুলোতে দেখা গেছে, ২০১৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের লবিস্ট ফার্ম ‘একিন গাম্প’র সঙ্গে রাজনৈতিক দল পরিচয়ে চুক্তিবদ্ধ হয় বিএনপি। দলীয় প্যাডে সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই চুক্তিতে দেখা গেছে, ২০১৭ সালে‘একিন গাম্প’কে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা দেয় বিএনপি। ২০১৬ সালে দেয় ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা, ২০১৫ সালে দেয় ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশি টাকায় ৩ বছরে ২২ কোটি ১০ লাখ টাকা দিয়েছে বিএনপি। এছাড়া ২০১৮ সালের আগস্টে ‘রাস্কি পার্টনার্স’ এবং ‘ব্লু স্টার’ নামে দুটি মার্কিন লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে ২০২০ সালের মে পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ হয় বিএনপি। তাদের ফির পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

সর্বমোট ৩টি লবিস্ট ফার্মকে দেশবিরোধী প্রচারণার জন্য ৩১ কোটি ২৮ লাখ টাকা দেয় বিএনপি। অথচ এর একটিরও হিসাব বা লেনদেনের কোনো বৈধ সূত্র কোথাও নেই। তাই অপযুক্তি দিয়ে বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বিএনপি।