বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নিয়ে তিন দশক আত্মগোপনে ছিলেন চরমপন্থি মানিক

প্রকাশিত : ০৬:১০ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ শনিবার

যাবজ্জীবন-কারাদণ্ড-নিয়ে-তিন-দশক-আত্মগোপনে-ছিলেন-চরমপন্থি-মানিক

যাবজ্জীবন-কারাদণ্ড-নিয়ে-তিন-দশক-আত্মগোপনে-ছিলেন-চরমপন্থি-মানিক

সর্বহারা দলের সক্রিয় সদস্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে মানিককে (৫৬) গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। ১৯৮৭ সালে গুরুদাসপুর থানা লুট করে একজন কনস্টেবলকে খুন, অস্ত্র লুট এবং আটক চরমপন্থিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার মানিক সর্বহারা দলের সক্রিয় সদস্য। সর্বহারাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সব কার্যক্রমে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তিনি ‘ছাত্তার’ নামে শ্রমিক সরদার হিসেবে কাজ করতেন।

শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি জানান, ২০১৮ সালে মানিক তার নাম পরিবর্তন করে সাইফুল প্রধান নামে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার ভোটার হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন।

১৯৮৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে একদল চরমপন্থি ছদ্মবেশে লুঙ্গি, গামছা পরা অবস্থায় হাতে পোটলা নিয়ে হাটের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকে। পোটলার মধ্যে তাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র লুকায়িত ছিল। তাদের মধ্যে কিছু লোক অস্ত্র প্রদর্শন করে টেলিফোন অফিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেন্ট্রাল কমান্ড বিকল করে দেন এবং কয়েকজন থানায় প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে থানা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।

এ সময়ে কনস্টেবল হাবিবুর রহমান বাধা দিলে চরমপন্থিরা তাকে গুলি করে হত্যা করে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে থানার অস্ত্রাগার লুট করে দুটি এসএমজি, চারটি এসএলআর, ১৮টি ৩.৩ রাইফেল ও গোলাবারুদ লুট করে থানার লকআপে বন্দি এক চরমপন্থি আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। তারপর আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তারা একযোগে টেলিফোন অফিস ও থানা কম্পাউন্ডে বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। পরে লুণ্ঠিত মালামাল নিয়ে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানায় ১৯৮৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়। এ মামলার তদন্ত শেষে সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০ জন আসামিকে গ্রেফতার করেন। 

গ্রেফতার আসামিদের জবানবন্দি, সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ৪৯ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০০৭ সালে মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।

র‌্যাব-৩ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে, এ মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নারায়ণগঞ্জ এলাকায় আত্মগোপন করে আছেন। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকা থেকে ‘ছাত্তার’ নামে ছদ্মবেশে আত্মগোপন করা সাইফুল ইসলাম ওরফে মানিককে গ্রেফতার করা হয়।