স্টেশনে ভিক্ষা করা ডেভিড এখন অ্যামাজনের শীর্ষ কর্মকর্তা
প্রকাশিত : ০৪:৫০ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার
স্টেশনে-ভিক্ষা-করা-ডেভিড-এখন-অ্যামাজনের-শীর্ষ-কর্মকর্তা
তবে, ডেভিড অ্যামব্রোজের এ যাত্রা খুব একটা সহজ ছিল না। ডেভিডের মা মানসিক রোগে ভুগছিলেন। দুই ভাইবোনের দায়িত্বও ছিল তার উপর। পরিবারসহ নিউইয়র্ক শহরের রাস্তায় দিন কাটাতেন ডেভিড। রাস্তার পাশের ফাস্ট-ফুড রেস্তোরাঁর শৌচালয়ই ব্যবহার করতেন ডেভিড। কখনো ঘুমাতেন মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে, কখনো আশ্রয় জুটত গির্জায়। গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ভিক্ষাও করেন তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে ডেভিড জানিয়েছেন, সারাদিনে তিনি কী খাবেন তা নির্ভর করত স্টেশনের যাত্রীদের দানের উপর। চার বছর বয়স থেকে তিনি এভাবেই দিন কাটিয়েছেন। এক ডলার পেলেই সারাদিন আর চিন্তা করতে হতো না তাকে।
১২ বছরে ডেভিডকে অনাথ আশ্রমে নেয়া হয়। এক সম্ভ্রান্ত পরিবার ডেভিডকে দত্তক নেন। ডেভিড মনে করেন, তার সাফল্যের পিছনে (পালিকা মা) হোলির ভূমিকা অনবদ্য।
অর্থাভাবের কারণে স্কুলে ভর্তি হননি তিনি। গ্রন্থাগারে পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান করতেন তিনি। হোলিই তাকে স্কুলে ভর্তি করান। উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন তিনি স্পেনে যান। স্পেনের এ শিক্ষামূলক ভ্রমণের সুবাদেই তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য নিউইয়র্কের ভাসার কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি সামান্য রোজগারের জন্য বহু জায়গায় চাকরিও করেছেন। সেই সময় হোয়াইট হাউসে ইন্টার্নশিপও করেন ডেভিড।
পরবর্তীকালে ইউসিএলএ স্কুল অব ল’ থেকে ডিগ্রি লাভ করে এক নামকরা সংস্থার আইন ও বাণিজ্য বিভাগের দফতরে চাকরির সুযোগ পান। ওয়াল্ট ডিজনি টেলিভিশন সংস্থার শীর্ষপদেও যুক্ত ছিলেন ডেভিড। দীর্ঘ আট বছর ধরে ওয়াল্ট ডিজনির সংস্থায় বিভিন্ন মানবহিতৈষী কাজও করেন তিনি। ২০২১ সালে তিনি অ্যামাজন সংস্থার বৈদেশিক বিষয়গুলো পর্যালোচনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
সাক্ষাৎকারে ডেভিড জানান, তিনি এখন বড় সংস্থার একজন শীর্ষকর্তা। কিন্তু কয়েক বছর আগেও তার খাবার জুটত না।
‘ফস্টারমোর’ নামের এক সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এর মাধ্যমে যে কেউ পালক পিতা-মাতা হতে পারবেন। দত্তক নেয়ার সুবিধাও পাওয়া যাবে ‘ফস্টারমোর’-এর মাধ্যমে। এমনকি ডেভিড নিজেও একজন পালক বাবা। তিনি অবশ্য মনে করেন, অনাথ শিশুদের দত্তক নেয়া ছাড়াও তাদের পাশে দাঁড়ানো যায়।
আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর তার লেখা ‘অ্যা প্লেস কলড হোম’ নামের এক স্মৃতিকথা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবে বলে জানান ডেভিড অ্যামব্রোজ।