দুর্গন্ধ ও সাপের উৎপাতে অতিষ্ঠ পাকিস্তানের বানভাসিরা
প্রকাশিত : ০৯:৫০ এএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার
দুর্গন্ধ-ও-সাপের-উৎপাতে-অতিষ্ঠ-পাকিস্তানের-বানভাসিরা
জানা গেছে, পাকিস্তানে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র কম থাকায় উঁচু জায়গায় থাকা রেলস্টেশন, বাসস্টেশনে আশ্রয় নিয়েছেন বানভাসিরা। এরমধ্যে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গ্রামীণ এলাকার ছোট একটি রেলওয়ে স্টেশন ও তার আশপাশে গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে আশ্রয় নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের একজন জেবুন্নিসা বিবি। বন্যার পানি তার বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় দু’সপ্তাহ আগে স্বামী-সন্তান নিয়ে এ স্টেশনে এসে আশ্রয় নেন তিনি।
জেবুন্নিসা বিবি বলেন, এখানে কোনো শৌচাগার বা গোসলের স্থান নেই। ফলে বাধ্য হয়েই আমাদের খোলা জায়গায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হচ্ছে। একে তো দুর্গন্ধে এখানে টেকা দায়, তারওপর খোলা জায়গায় প্রাকৃতিক কর্ম সারতে গিয়ে চরম লজ্জা ও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। আমি নিজেই এর শিকার হয়েছি কয়েকদিন আগে।
তিনি আরো বলেন, কয়েকদিন আগে একটি গাছের তলায় যখন প্রাকৃতিক কর্ম সারছিলাম তখন খেয়াল করলাম, একজন পুরুষ আড়াল থেকে দেখছে।
জেবুন্নিসা বিবি বলেন, ঐ ঘটনার পর থেকে আমার মেয়েদের নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। তাদের একা পাঠিয়ে আমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারি না। সবসময় ভয় হয়, নিশ্চয়ই আড়াল থেকে কোনো পুরুষ তাদের দিকে নজর রাখছে। আমরা সবসময় পর্দার আড়ালে থাকতে অভ্যস্ত।
স্টেশনটি সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, পয়োঃবর্জ্য, বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া গাছপালা ও শস্য পচার গন্ধ, বাসি-পচা খাবারের গন্ধে রীতিমতো ভারী হয়ে আছে সেখানকার বাতাস। সেই সঙ্গে স্টেশনের সর্বত্র সারাক্ষণ ভন ভন করছে মশা-মাছি। এক কথায় সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার সবধরনের উপকরণের উপস্থিতি রয়েছে স্টেশনটিতে।
স্টেশনটিতে আশ্রয় নেয়ার পর কয়েকজন নারী বন্যার পানিতে গোসল করা শুরু করেছিলেন। কিন্তু তার ফলে চর্মরোগ হওয়ায় এখন তা বন্ধ রয়েছে।
শামিন নামে এক নারী জানান, শৌচাগারে যেন ঘন ঘন যেতে না হয়- সেজন্য যতখানি সম্ভব কম পানি পান করছেন তিনি ও তার মেয়েরা। এতে সারাক্ষণই পিপাসার কষ্ট সহ্য করতে হয় তাদের।
তিনি আরো জানান, সাধারণত দিনের আলো নেভার পর সন্ধ্যা ও রাতের অন্ধকারে প্রাকৃতিক কর্ম সারতে যান তারা। সারক্ষণ খেয়াল রাখেন— কোনো পুরুষ তাদের অনুসরণ করছে কিনা। কিন্তু এখানে রাতের বেলায় বাইরে যাওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ রাত হলেই স্টেশনের বাইরের অন্ধকার এলাকায় এখানে সাপ আর কাঁকড়াবিছের আনাগোনা বেড়ে যায়।