তিস্তা চুক্তি শিগগিরই স্বাক্ষরিত হবে: আশা প্রধানমন্ত্রীর
প্রকাশিত : ০৬:১০ পিএম, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ বুধবার
তিস্তা-চুক্তি-শিগগিরই-স্বাক্ষরিত-হবে-আশা-প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, আমি পুনর্ব্যক্ত করেছি যে, ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘনিষ্ঠতম প্রতিবেশী। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল হিসেবে পরিচিত।
মঙ্গলবার হায়দরাবাদ হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত সাতটি সমঝোতা স্মারক বিনিময় প্রত্যক্ষ করার পর জারি করা এক যৌথ বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি উল্লেখ করেন, গত এক দশকে উভয় দেশই বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। দুটি দেশ বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার চেতনায় অনেক অমীমাংসিত ইস্যু সমাধান করেছে এবং আমরা অবিলম্বে তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষর করাসহ সব অমীমাংসিত ইস্যুর সমাধান আশা করছি।
দুই দেশের মধ্যে কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিসহ ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টনের মতো সব সমস্যার সমাধান করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এর ফলাফল উভয় দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। আমরা ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে বৈঠক করেছি। আগামী দিনগুলোতে আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাপক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।
তিনি আরো বলেন, আলোচনার সময় তারা অঙ্গীকার বাস্তবায়নের সম্ভাব্য উপায়গুলো সম্পর্কে এবং পারস্পরিক কল্যাণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। সংযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা, সীমানা এবং লাইন অব ক্রেডিট সম্পর্কেও আমরা আলোচনা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৫০ বছরে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব তৈরি করে উভয় দেশ পারস্পরিক স্বার্থে ক্রমবর্ধমান ব্যাপক বিষয়ে কাজ করছে। আমরা আলোচনায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে এবং দুই দেশে শান্তি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত যদি অংশীদার হিসেবে একসঙ্গে কাজ করতে পারে, তাহলে এটি শুধু দেশগুলোর জন্যই নয়, বরং সমগ্র অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫৪টি অভিন্ন নদী এবং চার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত বেষ্টিত বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত কল্যাণে বদ্ধপরিকর।
তিনি জানান, আজ দিনের শেষভাগে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং উপ-রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বা গুরুতর আহত ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সৈনিক/কর্মকর্তাদের সরাসরি বংশধরদের ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদান করবেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার ও জনগণের অমূল্য সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস ও সংস্কৃতি, পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধা, দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব এবং অব্যাহত সহযোগিতা জোরদার হয়েছে। এ সময় তিনি নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অধিকতর গতি সঞ্চার করে চলেছে।
ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী উদযাপন ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ এর সফল সমাপ্তির জন্য ভারত সরকার এবং এর জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।