বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কাজ না করেই মোটা অংকের বেতন পান জাপানের এই যুবক

প্রকাশিত : ১০:৫০ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

কাজ-না-করেই-মোটা-অংকের-বেতন-পান-জাপানের-এই-যুবক

কাজ-না-করেই-মোটা-অংকের-বেতন-পান-জাপানের-এই-যুবক

কাজ না করেই উপার্জন করা সবার জন্য একটি স্বপ্ন। কিন্তু সেই স্বপ্নের মতো কাজ করছেন জাপানের ৩৮ বছর বয়সী এক যুবক। মোটামুটি কিছু না করেই মোটা অংকের অর্থ আয় করেন তিনি। বলার মতো কাজটুকু হলো- তিনি নির্দোষ সঙ্গ দেন মানুষকে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, প্রতি বুকিংয়ের জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে ১০ হাজার ইয়েন নেন শোজি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায় ৬ হাজার ৬৬৫ টাকা।

শোজি বলেন, আমি মূলত নিজেকে ভাড়া দেই। আমার কাজ হলো, গ্রাহক যেখানে চান সেখানে থাকা, এর বেশি কিছু নয়। এভাবে গত চার বছরে অন্তত চার হাজার সেশন কাটিয়েছেন শোজি।

দেখতে একেবারে সাদামাটা এ জাপানি যুবকের টুইটারে অনুসারী রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ। সেখান থেকেই তিনি বেশিরভাগ গ্রাহকের সন্ধান পান। এদের মধ্যে অনেকেই তাকে একাধিকবার ভাড়া করেছেন। যেমন- এক গ্রাহক রয়েছেন, যিনি শোজিকে ২৭০বার ডেকেছেন।

শোজির পেশা তাকে অচেনা-অজানা গ্রাহকের সঙ্গে পার্কে বসে সি-স খেলতে পাঠিয়েছে। এমনকি এক গ্রাহককে ট্রেনের জানালার দিকে হাত নেড়ে তিনি বিদায়ও জানিয়েছেন। ঐ লোক চেয়েছিলেন, কেউ তাকে স্টেশনে বিদায় জানাতে আসুক।

তবে কিছু না করার অর্থ এই নয় যে, শোজি মোরিমোতো যেকোনো কিছুই করবেন। তিনি একটি ফ্রিজ নাড়ানোর প্রস্তাবে না করে দিয়েছিলেন, একবার কম্বোডিয়া যাওয়ার প্রস্তাবে রাজি হননি এবং কোনো ধরনের যৌন সম্পর্কিত অনুরোধেও সাড়া দেন না।

গত সপ্তাহে অরুণা চিদা নামে ২৭ বছর বয়সী এক তরুণীর সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন শোজি। শাড়ি পরা মেয়েটি চাচ্ছিলেন, ঐ পোশাকে বাইরে যেতে। কিন্তু এতে বন্ধুরা লজ্জিত হবে ভেবে দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এ কারণেই শোজিকে ডাকেন। পরে মুখোমুখি বসে চা-কেকের মতো বিষয় নিয়ে বিচ্ছিন্ন কথাবার্তা হয় তাদের।

অরুণা বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে থাকলে মনে হয়, আমাকে তাদের খুশি রাখতে হবে। কিন্তু ভাড়া করা লোকের (শোজি) সঙ্গে আমি আড্ডা দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করি না।

নিজের ‘প্রকৃত প্রতিভা’ সম্পর্কে জানতে পারার আগে একটি প্রকাশনা সংস্থায় কাজ করতেন শোজি। সেখানে প্রায়ই কাজ না করার জন্য বকাঝকা শুনতে হতো তাকে। শোজি বলেন, আমি ভাবতে লাগলাম, গ্রাহকদের সেবা দিতে যদি আমার ‘কিছু না করার ক্ষমতা’ প্রদান করি, তাহলে কী হবে।

সেই ভাবনা থেকে উদ্ভূত সাহচর্য ব্যবসাই এখন শোজি মোরিমোতোর একমাত্র আয়ের উৎস। এ আয় দিয়ে তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণ করেন।

দিনে কত আয় হয় তা বলতে অস্বীকার করলেও জাপানি এ যুবক জানিয়েছেন, তিনি দৈনিক এক থেকে দুইজন গ্রাহক নেন। মহামারির আগে এটি ছিল দিনে তিন থেকে চারজন।

শোজি বলেন, মানুষ মনে করে, আমার ‘কিছু না করা’ মূল্যবান। কারণ এটি (অন্যদের জন্য) দরকারি... তবে সত্যি, কিছু না করা খারাপ না।