বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘সালমান শাহ বাসায় আসলে কষ্টের কথা শেয়ার করত’

প্রকাশিত : ০১:২০ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

সালমান-শাহ-বাসায়-আসলে-কষ্টের-কথা-শেয়ার-করত

সালমান-শাহ-বাসায়-আসলে-কষ্টের-কথা-শেয়ার-করত

ঢালিউডের অমর নায়ক সালমান শাহ। আজ তার ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৬ সালের এই দিনে ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। বাংলা সিনেমার উজ্জ্বল নক্ষত্র, ক্ষণজন্মা এই চিত্রনায়ককে আজ স্মরণ করছে সিনেমাপ্রেমী অগণিত মানুষ।

তার মধ্যে রয়েছেন ছোট ও বড় পর্দার জনপ্রিয় নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। চয়নিকার স্বামী নির্মাতা অরুণ চৌধুরীর লেখা বিটিভির সাড়া জাগানো নাটক ‘নয়ন’-এ অভিনয় করেছিলেন সালমান। সেই স্মৃতিসহ সালমানকে স্মরণ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন চয়নিকা। তার সেই স্ট্যাটাসটি দৈনিক প্রভাতীের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

‘সালমান শাহ ইমন (আদরের ছোট ভাই) যদি এই পৃথিবীতে সত্যি সত্যি বেঁচে থাকতেন, আমার প্রথম ছবির নায়ক তিনিই হতেন। আমি আমার বহু ইন্টারভিউতে এটা বলেছি মুখ দিয়ে। এবং এটাও বলেছি আমার ‘বিশ্বসুন্দরী’ এর ইন্টারভিউতে বহুবার যে, সেক্ষেত্রে সিয়ামকে না পেলে এই গল্প চেঞ্জ করবো।’

সালমান শাহকে কাজ করতে গিয়ে অনেক মিস করি এখনো। তবে হ্যাঁ, তিনি আছেন। সবার মনের মাঝে। আজো অমলীন। কারণ তার ছিল কাজের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা। আর পরিচালক থেকে শুরু করে সবার প্রতি সম্মান।

সৃষ্টি অডিও ভিশন থেকে নাটক হলো অরুণ চৌধুরীর লেখা, ‘নয়ন’ ১৯৯৫ সালে। প্রডিউসার দেওয়ান হাবিব ভাই। গান লেখা অরুণ চৌধুরীর। গেয়েছিলেন শুভ্র দেব। শমী কায়সার, তমালিকা কর্মকার, ডলি জহুর, কাশেম আংকেল অভিনীত আহ! কী সুন্দর নাটক! কাজের প্রতি ইমনের ডেডিকেশন দেখে মুগ্ধ হলাম সবাই। আহারে ইমন!!

কত আনন্দ নিয়ে কাজ করতাম! আহ! ইমন, শমী, তমাল। ডিওপি ছিলেন আনোয়ার হোসেন বুলু ভাই। ছোটবেলার কত কিছু মনে পড়ে যায়! নীলা আন্টি আমাকে আর আমার বোনকে অনেক আদর করতেন। আর সালমান শাহ সুপারস্টার হবার পরেও একই রকম ছিলেন। এত্ত সুন্দর ব্যবহার।

অরুণ চৌধুরীর সাথে বিয়ের পরেও তা বদল হয়নি। বাসায় আসলে গল্প করত, মাঝে মাঝে কিছু কষ্টের কথা শেয়ার করত! আমি আর আমরা মুগ্ধ হয়ে তার কথা শুনতাম মালিবাগের ৫ তলার বাসায়। সালমান তুমি তখন যেমন আধুনিক ছিলে, আজ অবধি তুমিই আধুনিক। তুমি একমাত্র, অনলি ওয়ান।

মনে পড়ে যায়, এই দিনে তোমার চলে যাবার পর বিটিভিতে আবারও ‘নয়ন’ প্রচার হয়েছিল। এবং ঢাকা শহরের রাস্তা দেখে মনে হয়েছিল সেদিন, যেন কারফিউ দেয়া হয়েছে। সব সুনসান। কারণ তখন একমাত্র চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন। সত্যি আজো আমার মনে পড়ে যায় সব। ‘নয়ন’ দেখার পর আমাদের ছেলে অনন্য প্রতীক ছোট বেলায় বলতো, ‘বড় হয়ে আমি সালমান শাহ হবো!’

সালমান, তোমার মত কেউ নেই। তোমার মত কেউ আসেনি। তুমি একমাত্র যার জন্য সবার আজো এত বছর হয়ে গেলো চোখ ভেসে যায় জলে। কত মানুষ আসে যায়। কিন্ত বুকের ভেতর এমন হাহাকার তোমার জন্যই হয়।

যেখানেই থাকো ভালো থেকো। সবাই তোমাকে ভালোবাসে। আর এত কম সময়ে তুমি যা করে গিয়েছিলে, তা কেউ করতে পারেনি। ভালো অভিনয় শিল্পী অনেকেই হতে পারে। কিন্ত জনপ্রিয়তা আর তা ধরে রাখা এত বছর ধরে, সহজ না। আর তা এমনি এমনি হয় না। ভালোবাসা, শ্রদ্ধা তোমার জন্য। অনেক প্রার্থনা তোমার জন্য।’