যেভাবে একজন ভালো পর্যটক হবেন
প্রকাশিত : ১২:৫৫ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ শনিবার
যেভাবে-একজন-ভালো-পর্যটক-হবেন
পেরুর মাচুপিচু, স্কটল্যান্ডের এর সিনিক আইল অফ স্কাই; জাপানে গেইসাদের শহর; আমস্টারডামের এরেড লাইট ডিসট্রিক্ট; ভেনিসের খাল, ক্যালিফোর্নিয়ার পপির ক্ষেত; থাইল্যান্ডের মায়া বে সৈকত কিংবা প্যারিসের ল্যুভ জাদুঘর। - যেখানেই যান, সব জায়গায় অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়বে।
মানুষের অতিরিক্ত চাপ, পরিবেশ নোংরা করা, স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা, মাতালদের মতো বা নেশাগ্রস্ত আচরণ, কাউকে বাজেভাবে স্পর্শ করা বা তাদের জিনিষপত্র দখল, অথবা অতিরিক্ত দামাদামি করা। - আজকাল পর্যটন শিল্পের জোয়ারে ভেসে এসেছে অনেক সমস্যা! আবার ব্যাপারটা এমন নয় যে মানুষকে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা উচিত। প্রয়োজন হলো একজন ভাল পর্যটক হওয়া। এজন্য কিছু বিষয় বিশেষভাবে মনে রাখা প্রয়োজন। বিবিসিরি প্রতিবেদন অবলম্বণে জানিয়ে দিচ্ছি কিছু টিপস।
জানা থাকতে হবে কেন সেখানে যেতে চান?
আপনি জানার চেষ্টা করুন যে আপনি কেন ভ্রমণ করতে চান। প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কী কেবল মানুষকে দেখানোর জন্য কোথাও ভ্রমণ করতে চান?- নাকি আপনি ইতিহাস পছন্দ করেন, নাকি শুধুই প্রকৃতি? অন্য কৌশলটি হল নিজেকে জিজ্ঞাসা করা, আপনি কী দেখতে চান এবং কোন বিষয়ের প্রতি আপনার তেমন আগ্রহ নেই। যদি আপনি জাদুঘর পছন্দ না করেন তাহলে ল্যুভ বা উইজে ভিড় করার কোনো মানে নেই।
সেখানে যান যেখানে পর্যটকদের ভিড়বাট্টা কম
কোথাও যাওয়ার আগে, সেখানকার বিষয়ে আগে জানুন। হতে পারে সেটা বই পড়ে বা সিনেমা দেখে। গৎবাঁধা পর্যটন এলাকায় না গিয়ে এর বাইরের জগতটাও দেখুন। এটা ঠিক যে আপনি প্যারিসে গেলে আইফেল টাওয়ার অবশ্যই দেখতে চাইবেন, তা সে যতোই ভিড় থাকুক। সেটা অবশ্যই দেখবেন। সেইসঙ্গে প্যারিসের এমন আরো অনেক অলিগলি রয়েছে, যেটা হয়তো আজীবন আপনার স্মৃতি হয়ে থাকবে।কোথাও যাওয়ার আগে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তর গবেষণা করুন। ভিড়যুক্ত স্থানগুলো এড়িয়ে যেতে আপনি বিভিন্ন অ্যাপের সাহায্য নিতে পারেন।
শ্রদ্ধাশীল হওয়া
পর্যটন মানে শুধু কোথাও গিয়ে ভিড় জমানো না। এক্ষেত্রে আপনাদের সেই দেশের সংস্কৃতির আদ্যোপান্ত জানতে হবে। মানুষ সত্যিই সঠিক কাজটা করতে চায়, কিন্তু তাদের জানতে হবে এই সঠিক কাজটা কী। সেই কারণে আইসল্যান্ড ও জাপানে প্রচারাভিযান চালানো হচ্ছে যে, পর্যটকদের কীভাবে আচরণ করা উচিত। আইসল্যান্ডে প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, রাস্তার বাইরে ড্রাইভিং করা যাবে না, বিপদজনক ভাবে সেলফি তোলা যাবে না ইত্যাদি। জাপানী শহর কিয়োটোতে, তারা বিভিন্ন ভাষায় লেখা লিফলেট এবং কাগজের লণ্ঠন বিতরণ করেন। যেখানে সঠিক আচরণ সম্পর্কে উপদেশ দেয়া থাকে।
বিজ্ঞাপনের প্রতিশ্রুতিতে বাধা পড়বেন না
এতে করে আপনি যেমন একজন সচেতন পর্যটক হবেন। তেমনি খরচও কমিয়ে আনতে পারবেন অনেকটাই। আপনার যদি সীমিত টাকা থাকে। তার মানে এই নয় যে আপনার ভ্রমণ আনন্দদায়ক হবে না। যদি ঠিক ঠাক পরিকল্পনা করেন তাহলে সীমিত বাজেটেই সম্ভব অনেক কিছু। থাকার জন্য ইন্টারনেটে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই গবেষণা শুরু করুন। রিভিউগুলো যাচাই করুন। নিজের গন্তব্যস্থল সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন। নিশ্চিত হন আপনি সেখানে আসলেও যেতে চান কিনা!
স্বল্প খরচের ফ্লাইট বেছে নিন
প্যাকেজ ট্যুরে ঘুড়ে বেড়ানোর স্বাধীনতা তেমনটা থাকে না। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, অনেকেই প্যাকেজ ট্যুরে খরচ কম হওয়ার আশায় তাদের নানা অফারে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু জেনে রাখা ভালো যে এসব প্যাকেজে নানা ধরণের লুকায়িত খরচ থাকে। যা এক পর্যায়ে মূল খরচ অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া তাদের বেধে দেয়া সময়ে, বেধে দেয়া জায়গায় যাওয়ার কারণে আপনার ইচ্ছেমত ঘুরে বেড়ানোর স্বাধীনতাও থাকে না। তাই মনে রাখতে হবে যেখানেই যান না কেন। সেই ব্যাপারে বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন।