১৭২ দিনের অনশন ভাঙলেন ফিলিস্তিনি বন্দি
প্রকাশিত : ১১:৫০ এএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ শুক্রবার
১৭২-দিনের-অনশন-ভাঙলেন-ফিলিস্তিনি-বন্দি
খলিলের আইনজীবির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ খলিলের অনশনের মেয়াদ ছয় মাসের কাছাকাছি ও তার স্বাস্থ্যের অবস্থার চরম অবনতি হওয়ায় তাকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে।
দীর্ঘদিনের অনশনের কারণে ৪০ বছর বয়সী খলিলের ওজন কমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ কেজিতে। যেকোনো সময় মৃত্যু হতে পারে, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এরপরও অবিচল ছিলেন নিজ সিদ্ধান্তে। ইসরায়েলের অন্যায়ের বিরুদ্ধে চালিয়ে গেছেন নীরব প্রতিবাদ।
গত ডিসেম্বরে আরো অনেক ফিলিস্তিনির মতোই বিনা অভিযোগে আটক করা হয় খলিল আওয়াদেহকে। ইসরায়েল এই বিচারবহির্ভুত ধরপাকড়ের নাম দিয়েছে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশন বা প্রশাসনিক আটকাদেশ। আদালতে না তুলে দিনের পর দিন কারাগারে আটকে রাখা হয় এমন বন্দিদের। বিভিন্ন কারাগারে এমন ফিলিস্তিনি বন্দির সংখ্যা প্রায় ৭০০। যার প্রতিবাদ জানাতেই গত মার্চে আরো কয়েকজন বন্দির সাথে অনশন শুরু করেন খলিল।
আরো পড়ুন>> হামলার মধ্যেই ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জাতিসংঘ দল
অনশন শেষে খলিল বলেন, শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। ভেতরে মনে হয় শেষ হয়ে গেছি। তবে আল্লাহর ওপর ভরসা করে সাহস রেখেছি। যা আমাকে প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
গত মাসেও এক দফা তার মুক্তির আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল ইসরায়েলি আদালত। এতে নিন্দা-সমালোচনার ঝড় উঠলে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন ফিলিস্তিনিরা, চাপ দেয় মধ্যস্থতাকারী মিসরও। অবশেষে আইনজীবীরা জানালেন তার মুক্তি নিশ্চিতের খবর। তবে ২ অক্টোবর মুক্তি পেলেও সুস্থ হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালেই থাকতে হবে তাকে।
শারীরিকভাবে চরম দুর্বল হলেও মনোবল চাঙ্গা খলিলের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া ভিডিওবার্তায় নিজের মুক্তির আনন্দকে ভাগ করে নেন ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে। সেখানে তিনি বলেন, আল্লাহর অশেষ দয়ায় মুক্তির খবর পেলাম। অক্টোবরের ২ তারিখ ছাড়া পাবো। উঠে দাঁড়ানোর শক্তি যতদিন না পাবো ততদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। আমার মুক্তির ঘোষণা আসলে ফিলিস্তিনি জনগণের অর্জন। যারা আমার পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
আরো পড়ুন>> অবশেষে শ্রীলংকাকে ২৯০ কোটি ডলার দিচ্ছে আইএমএফ
খলিল আওয়াদের মুক্তির ঘোষণায় আনন্দিত ফিলিস্তিনিরা। একে বিজয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ফিলিস্তিনি সংগঠন ইসলামিক জিহাদ। তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি তেলআবিব।
২০০০ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের কারাগারে মোট ১২ বছর কাটিয়েছেন খলিল। এর মধ্যে পাঁচ বছরই প্রশাসনিক আটকে। গত বছরের ডিসেম্বরে আটক হওয়ার পর খলিল প্রথম পর্যায়ে ১১১ দিন অনশন-ধর্মঘট পালন করেন। সেসময় ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাকে মুক্তির আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। সেই আশ্বাসের ভিত্তিতে তিনি অনশন-ধর্মঘটের অবসান ঘটান। কিন্তু ইসরায়েলের কর্মকর্তারা কথা রাখেননি। আর তাই তিনি আবারও অনশন-ধর্মঘট শুরু করেন।