শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সালমান শাহর শহরে বেড়ে উঠতে পেরে গর্বিত শরীফুল রাজ

প্রকাশিত : ০৮:২০ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২২ মঙ্গলবার

সালমান-শাহর-শহরে-বেড়ে-উঠতে-পেরে-গর্বিত-শরীফুল-রাজ

সালমান-শাহর-শহরে-বেড়ে-উঠতে-পেরে-গর্বিত-শরীফুল-রাজ

ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহ আজও রয়েছেন ভক্তদের হৃদয়ে। তাকে অনুকরণ করেন বাংলা চলচিত্রের শিল্পিরা। সেই সালমানের শহরেই বেড়ে ওঠেছেন এ প্রজন্মের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শরীফুল রাজ। অমর নায়ক সালমানের শহরে বেড়ে ওঠতে পেরে গর্বিত তিনি। সোমবার সিলেটের গ্রান্ড সিলেট হোটেল ও রিসোর্টের সিনেপ্লেক্সে নিজের অভিনীত সিনেমা ‘পরাণ’ দেখতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন রাজ। 

শরীফুল রাজ বলেন, ‘সুপারস্টার সালমান শাহকে আমার দেখার সৌভাগ্য হয়নি। তখন সিনেমা কী তেমন বুঝতামও না। স্কুলে যাওযার সময় সালমান শাহর বাড়ির সামনে দিয়ে যেতাম। তার কবর জিয়ারতের সুযোগ হয়েছে। এসব কিছু আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। সালমান শাহকে এখনো মানুষ ভালোবাসে, লালন করে, ধারণ করে। আমারও প্রিয় নায়ক সালমান।  তার শহরে বেড়ে ওঠতে পেরে গর্বিত আমি’। 

শরীফুল রাজের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার আলমপুর গ্রামে। বাবার চাকরির সুবাদে বড় হয়েছেন সিলেটে। বাবা চাকরি করতেন সিলেটে। থাকতেন আম্বরখানা এলাকার সরকারি কলোনিতে। এখানেই শৈশব কেটেছে রাজের। তাই সিলেট ঘিরে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে রাজের। ঢাকােই সিনেমার রাজত্ব পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো স্বজনদের নিয়ে নিজের অভিনীত চলচিত্র দেখতে আসেন হোটেল গ্র্যান্ড সিলেটে। ভক্তদের সঙ্গে চলচিত্র দেখাার আগে মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের সাথে। 

চিত্রনায়ক শরীফুল রাজ বলেন, সিলেটের সিনেমা হলগুলোতেও আমি প্রচুর সিনেমা দেখেছি। নিজে টিকিট কেটে সিনেমা দেখতাম। একটা সময় আমার জানামতে সিলেটে ১৫-১৬টা হল ছিল। এখন অনেকগুলোই নেই। তবে এই সিনেপ্লেক্স উদ্বোধনের পর থেকেই ভেবেছি, আসব। এখানে দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো এখন “পরাণ” চলছে। “হাওয়া”ও ভালো চলেছে। নিজের শহরে সেটা দেখার তাড়না থেকেই সিলেটে আসা।

তিনি বলেন, ‘আমার বয়সের অর্ধেকটাই আমি সিলেটে কাটিয়েছি আব্বুর চাকরির সুবাদে। সিলেটের শাহী ঈদগাহ’র শাহ মীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা শেষে দি এইডেড হাইস্কুলে ভর্তি হিই। সেখান থেকে এসএসসি পাশ করে ভর্তি হই মদন মোহন কলেজে। এরপর ঢাকায় চলে যাই। শুধু স্কুল কলেজ না, কালচারাল একটিভিটিতেও ছিলাম, রেড ক্রিসেন্টের মেম্বার, এক্স ক্যাডেট। সব মিলিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আমি জড়িত ছিলাম। 

শরীফুল রাজ বলেন, ‘সিলেটে আমার খুব কাছের কয়েকজন বন্ধু আছেন। তারা অনেকেই দেশের বাইরে। কেউ কেউ দেশে আছেন। আমার দুঃসময়ে তারাই আমার পাশে ছিলেন। তারা আমাকে উৎসাহ দিতেন। স্বপ্ন দেখাতেন। সিলেট ছাড়ার পরও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল, এখনো আছে। তারাও ঢাকায় যেত, আমি সিলেট আসতাম। জীবনে অনেক কিছুতেই ফেইলিয়র হয়েছি, কিন্তু ওরা আমাকে ইন্সপায়ার করেছে হাল না ছাড়ার জন্য।’

সিলেটের জন্য আলাদা টান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আব্বু রিটায়ারমেন্টের পর সিলেটেই থেকে গেলেন, সিলেটকে খুব পছন্দ করেন। আব্বু বটেশ্বরে বাসা করেছেন, সেখানেই থাকেন। সেই সূত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আমার দাদার বাড়ি, সিলেট আমার আব্বুর বাড়ি। সিলেট আমার দীর্ঘ ১২-১৩ বছরের জার্নি, অনেক লম্বা জার্নি। অনেক বছর থেকেছি আম্বরখানা সরকারি কলোনিতে। অনেক স্মৃতি, কলোনির একটা লাইফ আছে, খুবই মজার লাইফ। কলোনির সবাইকে খুব মিস করি, প্রত্যেকটা ফ্যামিলিকে মিস করি, সবাই এক ছিল, সব বিল্ডিংয়ের সবাইকে চিনতাম, অনেক বন্ধু ছিল, ওদের মিস করি। সময় পেলে তাঁদের সাথে দেখা করবো।’

পরীমণি প্রসঙ্গে শরীফুল রাজ বলেন, সে একজন অভিনেত্রী হিসেবে যেমন বিউটিফুল, তেমনি স্ত্রী হিসেবে বিউটিফুল-মা হিসেবেও বিউটিফুল। তারপরও অনেকে বিষয়টাকে অনেকভাবে নেয়। অনেকে ভিন্ন চোখে লেখালেখিও করে। সব মিলিয়ে বলবো সে আমার জীবনে অনেক বড় প্রাপ্তি। 

রাজের বড় পর্দায় যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে রেদওয়ান রনির 'আইসক্রিম' ছবির মাধ্যমে। মুক্তির পর প্রথম ছবিতেই খানিকটা আলোচনায় আসেন এই নবাগত। মাঝে এক বছর অভিনয় করেননি। আবার র‌্যাম্প, স্থিরচিত্রের মডেলিংয়ে ফিরে যান তিনি। পরের বছর ২০১৭ সালে তানিম রহমানের 'ন ডরাই' ছবিতে অভিনয় করে নতুনভাবে সবার দৃষ্টি কাড়েন এই অভিনেতা। মেধাবী পরিচালকরাও তাঁর মধ্যে খুঁজে পান নতুন সম্ভাবনা। আর পেছনে ফিরতে হয়নি। পরপর রায়হান রাফির 'পরাণ', মেজবাউর রহমান সুমনের 'হাওয়া', সবশেষ গিয়াসউদ্দিন সেলিমের 'গুণিন' ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। তিনটি ছবিই মুক্তি পেয়েছে। রাজ অভিনীত আরও কিছু ছবি রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। এর মধ্যে রয়েছে রায়হান রাফির 'দামাল' ও নিয়ামুল মুক্তার 'রক্তজবা'।