বিএনপির অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা: দায়িত্ব নিতে চান খন্দকার মোশাররফ
প্রকাশিত : ০৫:০৫ পিএম, ২২ আগস্ট ২০২২ সোমবার
বিএনপির-অভ্যন্তরীণ-অস্থিরতা-দায়িত্ব-নিতে-চান-খন্দকার-মোশাররফ
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, দলে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পরেই পদ ও জ্যেষ্ঠতায় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের অবস্থান। তার পক্ষে দলের গোটা কয়েক নেতাও রয়েছেন।
সম্প্রতি তারেক রহমানের সঙ্গে স্কাইপে আলোচনায় কুমিল্লা উত্তর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী খন্দকার মোশাররফকে বিএনপির দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি তারেক রহমানকে বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিতে হবে।
ঐ মতবিনিময় সভায় ড. মোশাররফের পক্ষের লোকজন এ প্রস্তাবে সমর্থন দেন। সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খানও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মির্জা ফখরুলের ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, দল চলছে যৌথ নেতৃত্বে। দল পরিচালনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সিনিয়র নেতারা বৈঠক করে যৌথভাবেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সেখানে ড. মোশাররফ হোসেনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার প্রস্তাব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রমূলক।
আরো পড়ুন> অফিস-আদালতে পর্দা ব্যবহার বন্ধ
কুমিল্লা বিএনপির একজন নেতা বলেন, তারেক রহমানের সঙ্গে স্কাইপে আলোচনায় বসার আগের রাতে ড. মোশাররফের উপস্থিতিতে তার বাসায় প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। কুমিল্লার গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাদ দিয়ে কেবল ড. মোশাররফের অনুগতদের তারেক রহমানের স্কাইপে মিটিংয়ে নেয়া হয়।
তারেক রহমানকে মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী বলেন, আপনি বিদেশ আছেন, ম্যাডাম কারাগারে। এ অবস্থায় সিনিয়র হিসেবে খন্দকার মোশাররফ সাহেবকে দলের দায়িত্ব দেওয়া উচিত।
অন্যদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করে আসছেন মির্জা ফখরুল, যেটা ড. মোশাররফ ও তার পক্ষের নেতারা চান না। বেগম খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারারুদ্ধ হওয়ার পর ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বৈঠক করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
ঐ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সে বৈঠকের পর দলের কিছু সিনিয়র নেতার অসন্তুষ্টির কারণে পরবর্তী বৈঠকগুলোতে ড. মোশাররফের বদলে সভাপতিত্ব করে আসছেন মির্জা ফখরুল। গত নির্বাচনে তিনি একক সিদ্ধান্তে কুমিল্লার দুটি আসন থেকে নির্বাচন করেন। সেখানে এমকে আনোয়ারের বড় ছেলে মাহমুদ আনোয়ারের ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকলেও ক্ষমতার জোরে তিনি মনোনয়ন নেন।
দলের একজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কর্মকাণ্ড ও আচরণ নিয়ে দলে কেউ কেউ সন্দেহ করেন। তিনি দলে থেকে দলের বিপক্ষে প্রকাশ্যে-গোপনে কাজ করছেন। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে তার লিয়াজোঁ থাকতে পারে বলেও সন্দেহ। তার মামলা নিয়ে দুদক অনেকটা চুপচাপ। দলের কোনো কোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে পাওয়া য়ায়নি।
গত জানুয়ারি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দল পুনর্গঠনে কাউন্সিল ডেকে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেন তিনি। তবে দলের হাইকমান্ড এটা আমলে নেননি। তিনি চান হয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে অথবা মহাসচিব হতে।
ড. মোশাররফের ঘনিষ্ঠ একজন নেতা বলেন, তিনি বিরোধ বাধাতে চান না। কিন্তু মির্জা ফখরুল ড. মোশাররফ সাহেবকে কোণঠাসা করে রাখতে চান। নেতার দাবি, সবচেয়ে সিনিয়র হওয়ার পরও ড. মোশাররফকে স্থায়ী কমিটিতে সভাপতিত্ব করতে দিচ্ছে না। তবে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপি ছেড়ে দেবেন বা ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আপস করছেন এমন কথা শুধুমাত্র অপপ্রচার।