রোববার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ৬ ১৪৩১   ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সঙ্গী খুঁজতে ব্যর্থ হয়ে জামায়াতেই ঝুঁকছে বিএনপি

প্রকাশিত : ০৪:০৫ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২২ বুধবার

সঙ্গী-খুঁজতে-ব্যর্থ-হয়ে-জামায়াতেই-ঝুঁকছে-বিএনপি

সঙ্গী-খুঁজতে-ব্যর্থ-হয়ে-জামায়াতেই-ঝুঁকছে-বিএনপি

দেশে রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে সঙ্গী খুঁজছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে ২২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে তারা। কিন্তু বৈঠকগুলো সফল হয়নি। কোনো দলই বিএনপির সঙ্গে এ অবস্থায় ঐক্যবদ্ধ জোট গঠন করতে রাজি নয়। ফলে বিএনপি এখন নতুন করে জোট গঠনের জন্য নানা রকম চেষ্টা করছে।  এ সুযোগে বিএনপিতে যারা জামায়াতপন্থী হিসেবে চিহ্নিত বা জামায়াতের সঙ্গে প্রকাশ্যে সম্পর্ক করতে চায় তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা এখন বিএনপি নেতৃত্বকে চাপ দিচ্ছে যেন জামায়াতের সঙ্গে থাকা ২০ দলীয় জোটকে আবার পুনরুজ্জীবিত করা হয় এবং ২০ দলীয় জোটের ব্যানারে আন্দোলন করা হয়। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্তত তিনজন সদস্য ২০ দলীয় জোটকে পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষে মত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এরা হলেন- ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এবং মির্জা আব্বাস। 

তারা যুক্তি দেখাচ্ছেন, ২০ দলীয় জোট হলো বিএনপির আদর্শিক জোট। এ আদর্শিক জোটকে বাদ দেওয়ার কোনো কারণ নেই। ২০ দলীয় জোটকে বাদ দিলে বিএনপিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। 

তারা মনে করছে যে, ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বে যদি আন্দোলন তৈরি করা যায় তাহলে এ আন্দোলনের চাবি যেমন বিএনপির হাতে থাকবে তেমনি এ জোট সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে এগোতে পারবে। তখন যে আন্দোলনের কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করা হবে সে কর্মসূচিগুলো অন্যদল আপনাআপনি মানবে। আর তারা যদি নাও মানে তাহলে কোনো অসুবিধা হবে না বিএনপির। কারণ ২০ দলীয় জোটই একটি সফল আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ট বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির সাম্প্রতিক সময়ে যে বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে সে বৈঠকগুলোতে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে লুকোচুরি না করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

আরো পড়ুন> ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকুন: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

বিএনপির অন্তত তিনজন নেতা বলেছেন, আমরা জামায়াতকে ছাড়া নির্বাচন করতে পারব না। জামায়াতকে ছাড়া আন্দোলনও করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আর এ বাস্তবতাতেই ২০ দলীয় জোটের পুনরুজ্জীবনের কথা নতুন করে সামনে এসেছে।

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির শুধু স্থায়ী কমিটিতে নয়, বিভিন্ন জেলায় মহানগরীতে বিএনপিতে প্রচুর জামায়াতপন্থীরা রয়েছেন। 

তারা মনে করছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য এ মুহূর্তে ২০ দলীয় জোটকে পুনরুজ্জীবিত করার কোনো বিকল্প নেই। খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীতে জামায়াতপন্থী বিএনপি নেতারা এখন প্রকাশ্যে জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক করছে এবং জামায়াত-বিএনপি মিলে বিভিন্ন সভা সমাবেশ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

বিএনপির ওপর একটি আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে, তারা যেন জামাতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক ত্যাগ করে। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত জামায়াতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ত্যাগ করা হয়নি। বরং কৌশলগতভাবে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে এক ধরনের নির্লিপ্ত সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। কৌশলগত কারণে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে ২০ দলীয় জোটকেও একরকম স্থগিত করে রেখেছে। কিন্তু এ তিনটির মধ্যে এখন বেশ তোলপাড় চলছে। 

বিএনপি-জামায়াতপন্থীরা মনে করছে এটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। আদর্শিকভাবে কাছাকাছি রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঐক্য কখনোই বিএনপির জন্য ইতিবাচক হবে না বলেও মন্তব্য করেন তারা।