বিদেশি ৯ ব্যাংকে ড. ইউনূসের ৭৫ কোটি টাকার হদিস
প্রকাশিত : ০৮:০৫ পিএম, ৭ আগস্ট ২০২২ রোববার
বিদেশি-৯-ব্যাংকে-ড-ইউনূসের-৭৫-কোটি-টাকার-হদিস
অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, বিশ্বের অন্তত ৯টি ব্যাংকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অ্যাকাউন্ট রয়েছে।এসব অ্যাকাউন্টে প্রায় ৭৫ লাখ ডলার পাওয়া গেছে, যা বাংলাদেশি টাকায় ৭৫ কোটি টাকার কাছাকাছি।
ড. ইউনূসের যেসব দেশে অ্যাকাউন্ট রয়েছে; তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জেপি মরগান চেস ব্যাংকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অ্যাকাউন্ট আছে ১৯৯৭ সালে থেকে। ব্যাংক অব আমেরিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অ্যাকাউন্টের খবর পাওয়া যায় ২০০১ সালের নভেম্বর থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সিটিব্যাংক এনএ’তে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করেছিলেন ২০০৪ সালে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এইচএসবিসি’তে তিনি ২০০৬ সালে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করেছিলেন। নোবেল শান্তি পুরস্কারের অর্থ এ চারটি ব্যাংকে রাখা হয়েছিল।
এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশে উপার্জিত অর্থ এখানে রয়েছে। এ ব্যাংকগুলোর মধ্যে জেপি মরগান চেস ব্যাংক থেকে হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনের তহবিলের জন্য অর্থ প্রদান করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জেপি মরগান চেস ব্যাংকের অ্যাকাউন্টটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে থাকলেও এটি আসলে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনূস সেন্টারের বলে জানা গেছে। কিন্তু এ ব্যাংকের হিসেব-নিকেশ ইত্যাদি সব তদারকি করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ব্যাংক অব আমেরিকার যে অ্যাকাউন্টটি আছে সেটি ড. ইউনূস এবং তার স্ত্রীর যৌথ।
সিটি ব্যাংক এনএ’তে অ্যাকাউন্টটি ড. ইউনূস পরিচালনা করলেও এটি সোশ্যাল বিজনেসের নামে পরিচালিত।
এইচএসবিসি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুইজারল্যান্ডের দুইটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করেছেন। ক্রেডিট সুইসভিত্তিক ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করেছেন এবং ইউবিএস ব্যাংকেও তার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ক্রেডিট সুইস ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করেছেন ১৯৯৮ সালে এবং সে হিসেব বিবরণীতে দেখা যায়, নরওয়েভিত্তিক টেলিনর কোম্পানির সঙ্গে গ্রামীণের চুক্তি করার কারণে কমিশন বাবদ পেয়েছিলেন ২ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক, যা বাংলাদেশি টাকায় ২ কোটি টাকার কাছাকাছি।
এছাড়াও টেলিনর থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন সময় বাংলাদেশি টাকায় ২০ কোটি টাকার মতো নিয়েছেন। ইউবিএস ব্যাংকেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি অ্যাকাউন্টের খবর পাওয়া গেছে। সে অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছিল ২০০২ সালে। এ ব্যাংকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রায় ৩০ কোটি সুইস ফ্রাঙ্কের খবর পাওয়া গেছে। ব্যাংকটির অ্যাকাউন্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্থায়ী আমানত হিসেবে চিহ্নিত অর্থাৎ ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট হিসেবে তিনি ইউবিএস ব্যাংকে অ্যাকাউন্টটি করেছেন।
জাপানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। দ্য ব্যাংক অব টোকিও মিতসুবিশি-ইউএফজে ব্যাংকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্থিতির পরিমাণ গত ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২ কোটি টাকা। এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূস সিঙ্গাপুরে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করেছেন।
সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০ জুলাই পর্যন্ত স্থিতির পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় ২৭ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বিশ্বের ৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্থিতির পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৫ কোটি টাকা বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে।
তবে সূত্রগুলো বলছে, এ হিসাব সম্পূর্ণ নয়। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এমনকি আফ্রিকার অন্তত দুটি দেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এ টাকাগুলো তিনি বাংলাদেশের আয়কর বিবরণীতে প্রকাশ করেননি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশে প্রচুর বক্তৃতা রাখেন। তার বইয়ের রয়েলিটি ও সামাজিক যোগাযোগ ব্যবসা এবং নানারকম পুরস্কারের অর্থ তিনি এসব ব্যাংকে গচ্ছিত রেখেছেন।
সম্প্রতি গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা নিষ্পত্তির প্রেক্ষাপটে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অর্থ সম্পদের বিষয়টি সামনে আসে। এ সময় দেখা যায়, গ্রামীণ টেলিকম প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। গ্রামীণ টেলিকমের এক হিসাবের প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ড. ইউনূস এখানে স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন। গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ ইউনূস সেন্টারে স্থানান্তরিত করেছেন।ইউনূস সেন্টার থেকে আবার সেই অর্থ আরেক জায়গায় স্থানান্তর করেছেন তিনি। বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক ড. ইউনূস কীভাবে হলেন, সেটি তদন্তের দাবি রাখে বলে সংশ্লিষ্টরা প্রশ্ন রাখেন।