নাগরিক ঐক্যের মান্নার জ্ঞান আতঙ্কে বিএনপি নেতারা!
প্রকাশিত : ০৫:০৫ পিএম, ৭ আগস্ট ২০২২ রোববার
নাগরিক-ঐক্যের-মান্নার-জ্ঞান-আতঙ্কে-বিএনপি-নেতারা
বিএনপির অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত না হয়েও উপস্থিত হন এবং বিএনপির নেতাদের মতোই আচরণ করেন। বিএনপির নেতারাও মাহমুদুর রহমান মান্নাকে প্রকাশ্য সমালোচনা করতে এখন ভয় পান। কারণ মান্নার সঙ্গে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, মাহমুদুর রহমান মান্না তাদের জন্য এখন একটা বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিপত্তি বিরক্তির বিপদ। মাহমুদুর রহমান মান্না এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে একটি বিরক্তির নাম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে মাহমুদুর রহমান মান্না লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তারেক জিয়া তাকে একবার বিএনপিতে যোগ দেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সে সময় তিনি বিএনপিতে যোগ দেননি। কিন্তু বিএনপিতে যোগ না দিলেও তিনি তারেক জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তারেক জিয়া এখন মাহমুদুর রহমান মান্নার ওপর অনেকখানি নির্ভরশীলও বলে জানা গেছে।
প্রতিদিনই মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়। একদা বাম এই নেতা বাকপটু, কথাবার্তায় অত্যন্ত চতুর। সে কারণে সহজে তিনি তারেকের মতো একজন ব্যক্তিকে বশীভূত করতে পেরেছেন এবং তারেক জিয়ার অনেক সিদ্ধান্তই এখন মান্নার পরামর্শ বলে জানা গেছে।
এটি বিএনপিতে জানাজানি হওয়ার পর মাহমুদুর রহমান মান্নাকে নিয়ে বিএনপির অনেকেই আতঙ্কিত। তারা মান্নার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনো কথাবার্তা বলেন না। এমনকি মাহমুদুর রহমান মান্নার সামনে তারা দলের কোনো বিষয় আলোচনাও করেন না।
বিএনপির এক নেতা বলেন, কিছুদিন আগে মাহমুদুর রহমান মান্না তাকে ফোন করেছিলেন। একটি বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ হয় এবং সেখানে তিনি বিএনপির কিছু নেতিবাচক বিষয়ও তুলে ধরেন। দুই দিন পর লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া তাকে টেলিফোন করে বকাঝকা করেন যে, তিনি দলের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তারেক জিয়া হুমকিও দিয়েছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের কথাবার্তা বলা হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঐ নেতা বলেন, আমি শুধু মাহমুদুর রহমান মান্না ছাড়া কারো সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলিনি। তার মানে স্পষ্টতই মান্নাই এ কথা তারেক জিয়াকে বলেছেন।
ইদানীং বিএনপির সব কর্মসূচিতে মাহমুদুর রহমান মান্না এসে উপস্থিত হন। সম্প্রতি ভোলায় নিহত দুইজনের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠানে বিএনপি কার্যালয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। তখন দলের নেতাকর্মীরা প্রশ্ন তোলেন, এটি বিএনপির কর্মসূচি। মান্না এখানে কেন? দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেহেতু তারেক জিয়ার সঙ্গে মান্নার ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি জানেন সেজন্য তিনি পরিস্থিতি সামাল দেন। তিনি বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে আমাদের শরিকদের যে কেউ আসতে পারে। এতে কোনো বাধা নেই।
কিন্তু মাহমুদুর রহমান মান্না কেবল বিএনপির কর্মসূচিতে এসেই ক্ষান্ত হচ্ছেন না, তিনি বিএনপির বিভিন্ন নেতাকে নসিহত দিচ্ছেন, উপদেশ দিচ্ছেন। কি করতে হবে, না করতে হবে, কীভাবে বক্তৃতা দিতে হবে, কোন লাইনে কথা বলতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের পরিধি ছাড়িয়ে তিনি এখন ছাত্রদল, যুবদলের নেতাদেরকেও পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে প্রকাশ্যে বিএনপি নেতারা কোনো কিছু না বললেও গোপনে তারা ক্ষুব্ধ।