সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দেখে আসতে পারেন ফরিদপুরের মথুরাপুর দেউল

প্রকাশিত : ১১:৫৫ এএম, ১৮ জুলাই ২০২২ সোমবার

দেখে-আসতে-পারেন-ফরিদপুরের-মথুরাপুর-দেউল

দেখে-আসতে-পারেন-ফরিদপুরের-মথুরাপুর-দেউল

ষোড়শ শতাব্দীতে সংগ্রাম সিং নামের এক সেনাপতি মথুরাপুর দেউল নির্মাণ করেছিলেন  মথুরাপুর দেউল (Mathurapur Deul)। বাংলার ইতিহাসে এর নির্মাণশৈলী অনন্য বৈশিষ্ঠ বহন করে ৷ ষোড়শ শতাব্দীর স্থাপনা গুলোর মধ্যে মথুরাপুর দেউল সম্ভাবত একমাত্র রেখা প্রকৃতির দেউল ৷

মথুরাপুর দেউলদেউলটি বারো কোণ বিশিষ্ঠ একটি ভবনের মত স্থাপনা ৷ দেউলটিতে দুইটি প্রবেশ পথ আছে, একটি দক্ষিণ মুখী অন্যটি পশ্চিম মুখী ৷ এই দেউলটি বারোকোন বিশিষ্ট এবং মাটি থেকে প্রায় ২১.২ মিটার উঁচু; যার ভিতর একটি ছোট কক্ষ রয়েছে।

একটি ঐতিহ্যবাহী প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। দেউলটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মধুখালী বাজার থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে চন্দনা নদীর তীরে অবস্থিত। টেরাকোটার দৃষ্টিনন্দন ও শৈল্পিক কারুকার্যমন্ডিত।  দেউলটিতে প্রবেশের দুইটি দরজা রয়েছে। সমগ্র মঠ জুড়ে শিলা খন্ডের ছাপচিত্রের পাশাপাশি মাটির ফলকের তৈরি অসংখ্য ছোট ছোট মুর্তির দেখা মিলবে। এসব মুর্তির মধ্যে আছে নৃত্যরত নর-নারী, মস্তকবিহীন মানুষের প্রতিকৃতি, তীর ধনুক হাতে হনুমান, পেঁচা, ঘোড়া ইত্যাদি।

শৈল্পিক কারুকার্যমন্ডিত দেউলের দেয়ালজানা যায়, ১৬৩৬ সালে ভূষণার জমিদার সত্রাজিতের মৃত্যুর পর সংগ্রাম সিং অত্র এলাকার রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব লাভ করেন।এ নিয়ে ভিন্নমতও আছে। সম্রাট আকবরের বিখ্যাত সেনাপতি মানসিং রাজা প্রতাপাদিত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের স্মারক হিসেবে মথুরাপুর দেউলটি নির্মাণ করা হয়৷ অর্থাৎ মথুরাপুর দেউল একটি বিজয়স্তম্ভ। যদিও এসকল তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না৷ 

২০১৪ সালে মথুরাপুর দেউলটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কতৃক জাতীয় পুরাকীর্তি স্থান হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। স্থাপনাটির মূল গঠন উপাদান চুন-সুরকির মিশ্রণ ৷ দেউলের বাইরের দেয়ালটি লম্বালম্বিভাবে সজ্জিত। 

পুরো স্থাপনা জুরে টেরাকোটার জ্যামিতিক ও বাহারী চিত্রাংকণ রয়েছে ৷ তবে দেউলটির কোথাও কোন লেখা পাওয়া যায় নি ৷  এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একটি সুরক্ষিত সম্পদ ৷

কিভাবে যাবেন
গাবতলি বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকা-ফরিদপুর রুটে চলাচল করে যেসব পরিবহর সেগুলো মধ্যে আছে, সাউথ লাইন, আজমেরি এন্টারপ্রাইজ, গোল্ডেন লাইন এসব বাসে যেতে পারেন। খুলনা, গোপালগঞ্জ এবং যশোরগামী বাসে সরাসরি মধুখালীতের নামতে পারবেন। মধুখালী বাজার থেকে রিকশায় দশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাবেন মথুরাপুর দেউলে। রাস্তার পাশেই স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকা দেউলটি পথচারীদের নজর কেড়ে নেয়।