মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জামায়াতেই ভরসা বিএনপির!

প্রকাশিত : ০৫:০৫ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২২ শনিবার

জামায়াতেই-ভরসা-বিএনপির

জামায়াতেই-ভরসা-বিএনপির

শেষমেশ দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর কাছেই ভরসা খুঁজছে বিএনপি। যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিষিদ্ধ এই রাজনৈতিক দল নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও রাজনীতির মাঠে তাদের শূন্যতা অনুভব করছে বিএনপি। 

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে বরাবরই আন্দোলনের কথা বলে আসছি আমরা। কিন্তু আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়নি। এক্ষেত্রে জামায়াতের অভাববোধ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তাই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এদিকে বিএনপির এমন সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেননি সাধারণ মানুষ ও বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, বিএনপি আবারো প্রমাণ করল তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। কারণ জামায়াত বাংলাদেশের স্বাধীনতায় প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছে। পাকিস্তানি হায়েনাদের পক্ষ নিয়ে ৩০ লাখ শহিদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানিতে সহায়তা করেছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য এমন একটি অপশক্তিকে সঙ্গে নিয়ে যারা এগোতে পারে তাদের দ্বারা দেশ কখনোই উপকৃত হবে না।

ইতিহাস বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিএনপির হাত ধরেই স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পায় জামায়াত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃসংশভাবে হত্যা করে জিয়াউর রহমান প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে জামায়াতের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন।

জিয়ার সরকার এ সময় জামায়াত নেতা গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার অনুমতি দেয়। ১৯৭৯ সালের মে মাসে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ পুনরায় আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে। পরবর্তী সময়ে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, দুর্নীতি ও লুটপাটসহ নানা অপরাধ সংগঠিত করেছে বিএনপি-জামায়াত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরো বলেন, ২০১৩ সালে হাইকোর্টের রায়ে নির্বাচন কমিশনে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ বলে ঘোষিত। প্রায় সব শীর্ষ নেতাই যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত। অনেকের এরই মধ্যে বিচার শেষে রায় কার্যকরও হয়েছে। এমন একটি রাজনৈতিক দলের পরম মিত্র বিএনপি। এতদিন জনগণের চাপে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক পরিষ্কার না করলেও এবার বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাল- জামায়াতকে তাদের দরকার। জামায়াত ছাড়া তারা আন্দোলন করতে পারছে না। তাহলে এটাই প্রমাণ করে জামায়াত একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল। এমন দলকে সঙ্গে নিয়ে যারা রাজনীতি করে তারাও বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তি।