রোববার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ৭ ১৪৩১   ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা

প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২২ শনিবার

বিএনপি-থেকে-মুখ-ফেরাচ্ছেন-তৃণমূল-নেতারা

বিএনপি-থেকে-মুখ-ফেরাচ্ছেন-তৃণমূল-নেতারা

নির্বাচনে অংগ্রহণের অনীহা প্রকাশসহ বিভিন্ন কারণে দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা। যার ফলে কর্মী ও নেতাদের সমন্বয়ের অভাবে মাঠপর্যায়ে মুখ তুবড়ে পড়েছে বিএনপি।

জানা গেছে, প্রতিনিয়ত দলীয় ভুল সিদ্ধান্ত, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিচ্ছিন্নতা, কেন্দ্রীয় নেতাদের অবহেলা, অর্থের প্রভাব, কমিটি নিয়ে অসন্তোষ, ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন, মনোনয়ন বাণিজ্য, পরনির্ভরশীলতা, নির্বাচনেরর প্রতি অবিশ্বাসের কারণে ক্ষুব্ধ তৃণমূলের নেতারা। সুনির্দিষ্ট ভবিষ্যৎ বা এজেন্ডা না থাকায় বিএনপির প্রতি নেতাদের আগ্রহও কমেছে।

নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক নেতা বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে শীর্ষ নেতাদের সাক্ষাৎ সহজে মিলছে না। এলাকায় ব্যক্তিগত গ্রুপিংয়ের কারণে নেতাকর্মীরা বিএনপির রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। গ্রুপিংয়ের একটা সমাধানের জন্য এসেছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা আয়েশে বাসায় দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীরা নিষ্ক্রিয় থাকায় আমি নিজেও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছি। কারণ, কর্মী ছাড়া রাজনীতিতে আমি অচল। এখন বিএনপিই যদি কর্মী না চায় তাহলে নেতা হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না। আমরা যদি অস্তিত্ব সংকটে পড়ি তাহলে বিএনপির পেছনে কেন সময় ব্যয় করব?

মাগুরা জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নির্বাচন একটি বাধ্যতামূলক প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়ায় অংশ না নিয়ে বিএনপি মহাভুল করছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় মাঠপর্যায়ের নেতারা আমাদের মতো জেলা পর্যায়ের নেতাদের কাছে আসেন না। দলের প্রয়োজন না থাকায় নিজেরা প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছেন। এখন নির্বাচনে হেরে গিয়ে আমাদের কাছেও তারা আসছে না।

এদিকে, সদ্য বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী একাধিক নেতা বলেন, বিএনপি রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে ব্যর্থ। কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের নেতারা মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের অবহেলার চোখে দেখেন। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিগুলো বাণিজ্যকরণের ফসল। যেহেতু বুক ফুলিয়ে নিজের পরিচয় দিতে পারি না তাই বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে পড়েছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, আমাদের বড় সমস্যা হলো মাঠের ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীদের মূল্যায়ন করি না। যেখানে আমাদের দ্বন্দ্বই মেটছে না সেখানে তৃণমূলের সমস্যা সমাধান করাটাও বেশ কঠিন। এরই মধ্যে বিএনপির হাইকমান্ড শত শত অভিযোগ পেয়েছে। আমাদের মধ্যে তৃণমূলের রাজনীতি পুনর্গঠনে কোনো পরিকল্পনা নেই। এসব নিয়ে মুখ খুললে নিজের পদ নিয়েই পরে টানাটানি শুরু হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন হচ্ছে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের অক্সিজেন। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সক্রিয় রয়েছে বলেই নামসর্বস্ব দল এখনো টিকে আছে। যদি বিএনপি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ না নেয় তবে দলটি বিলীন হয়ে যাবে। এরই মধ্যে বিএনপির তৃণমূল নেতারা বেশ হতাশায় রয়েছেন। বিএনপি যদি  তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন না করে তবে মাঠপর্যায় থেকেও দলটি হারিয়ে যাবে।