শিশুদের ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম
প্রকাশিত : ০১:৫৫ পিএম, ৭ জুলাই ২০২২ বৃহস্পতিবার
শিশুদের-ই-পাসপোর্ট-করার-নিয়ম
অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদপত্রের অনুলিপি
হাতে লেখা বা কম্পিউটারে মুদ্রণকৃত জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র এখন আর ব্যবহৃত হয় না। তাই বাচ্চাদের ই-পাসপোর্টের জন্য প্রথমে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করে নিতে হবে। অনলাইনে যদি ওই শিশুর জন্ম সনদটি প্রদর্শিত হয়, তবেই তা ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য উপযুক্ত।
বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি
বাংলাদেশ পাসপোর্ট নীতি অনুযায়ী ৬ থেকে ২০ বছরের নাগরিকদের পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনের পাশাপাশি বাবা ও মায়ের প্রত্যেকের জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি প্রয়োজন। বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের নামে ইংরেজি বানানের সঙ্গে সন্তানের জন্ম সনদে বাবা বা মায়ের নামের বানান মিল থাকা আবশ্যক। সামান্য ভুল থাকলেও তা আগে থেকেই সংশোধন করে নিতে হবে।
থ্রি-আর ছবি (শুধুমাত্র অনুর্ধ্ব ৬ বছরের শিশুদের জন্য)
ছয় বছরের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অফিসে ছবি তোলার সময় জটিলতা সৃষ্টি হয়। তাই এদের ক্ষেত্রে ল্যাবে প্রিন্ট করা থ্রি-আর সাইজের ধূসর ব্যাকগ্রাউন্ডের এক কপি ছবি তুলতে হবে। সেটি আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় সঙ্গে করে পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু শিশুর বয়স ছয় বছরের বেশি হলে কোনো ছবির দরকার নেই।
পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান
ই-পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান অনলাইনে সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের প্রাপ্তি বাতায়ন ই-চালান ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে। অতঃপর তা পূরণ করে নিকটস্থ যেকোনো সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংকে জমা দেওয়া যাবে। তাছাড়া ব্যাংক এশিয়া, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান নিয়ে থাকে। চালান নেয়ার পর ব্যাংক থেকে চালানের গ্রাহক কপিসহ একটি জমা রশিদ দেওয়া হবে।
১৮ বছরের নিচে যে কোনো বয়সের শিশুর জন্য শুধুমাত্র পাঁচ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট নির্বাচন করতে হবে। অপ্রাপ্তবয়স্ক ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের ক্ষেত্রেই ই-পাসপোর্ট আবেদন ফি সমান। দেশের ভেতরে ই-পাসপোর্ট ফিয়ের সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট থাকে। পাঁচ বছর মেয়াদি ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্টের জন্য নিয়মিত/সাধারণ ডেলিভারি ফি চার হাজার ২৫ টাকা। এক্সপ্রেস সেবার জন্য ছয় হাজার ৩২৫ টাকা ও সুপার এক্সপ্রেস হলে আট হাজার ৬২৫ টাকা দিতে হয়।
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনপত্র ও শিডিউল কপি
ই-পাসপোর্ট আবেদন সম্পন্ন হলে একদম শেষে প্রিন্ট সামারি থেকে এক পৃষ্ঠার অনলাইন ই-পাসপোর্ট শিডিউল কপি পাওয়া যাবে। আর ডাউনলোড অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম-এ ক্লিক করলে তিন পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন কপি পাওয়া যাবে।
শিশুদের ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইন আবেদন পদ্ধতি
শুরুতেই বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট অনলাইন পোর্টালে যেয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার, ইমেইল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে হবে। অতঃপর ড্যাশবোর্ডের ওপরের মেনু থেকে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করে প্রথমে আবেদনকারির জেলা ও থানা নির্বাচন করতে হবে। এরপরের ধাপেই ব্যক্তিগত তথ্যাদি দেওয়ার পালা। এ অংশে শিশুর জন্ম নিবন্ধন সনদপত্রের অনুরূপ তথ্য দিতে হবে। এখানে পেশার ক্ষেত্রে আদার্স তথা অন্যান্য নির্বাচন করাটা উপযুক্ত।
ই-পাসপোর্ট আবেদনপত্র জমা ও সময়সীমা
যাবতীয় নথিসহ আবেদনপত্রটি জমার জন্য চলে যেতে হবে থানার আওতাধীন পাসপোর্ট অফিসে। এ সময় জন্ম নিবন্ধন সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রগুলোর সঙ্গে সেগুলোর মূল কপিও সঙ্গে রাখতে হবে। শিশুর থ্রি-আর সাইজ ছবি আলাদা রাখতে হবে।
অনুর্ধ্ব ছয় বছর বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নথিসহ আবেদনপত্র জমা নিয়েই ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ দেওয়া হবে। কারণ ছয় বছরের কম বয়সীদের বায়োমেট্রিক নেওয়া হয় না। থ্রি-আর ছবিটিকেই ই-পাসপোর্টে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ছয় বছরের বেশি বয়সের শিশুদের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিকের জন্য সাক্ষাতকারের শিডিউল দেওয়া হয়। বায়োমেট্রিক নেয়ার পর পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ দেওয়া হয়।
নিয়মিত/সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ডেলিভারি স্লিপ হাতে পাওয়ার দিন থেকে ১৫ অথবা ২১ কার্যদিবস। এক্সপ্রেস ডেলিভারিতে এই সময়টি কমে আসে সাত অথবা ১০ কার্যদিবসে। আর সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারিতে পাসপোর্ট হাতে আসতে সময় লাগে মাত্র দুই কার্যদিবস। তবে এই সুপার এক্সপ্রেস সুবিধাটি শুধুমাত্র আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস থেকে পাওয়া যায়।