ভাঙনের মুখে বিএনপি
প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ২ জুলাই ২০২২ শনিবার
ভাঙনের-মুখে-বিএনপি
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, বিএনপিকে বাঁচাতে সক্রিয় হচ্ছেন দলটির এক সময়ের সংস্কারপন্থীরা। বিএনপিতে শুদ্ধি অভিযান চালানোর পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন তারা। সংস্কারপন্থীরা দাবি করছেন, যেকোনো মূল্যে বিএনপিকে রক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে হার্ডলাইনে যেতে হবে।
সূত্র আরো জানিয়েছে, হার্ডলাইনের কথা শুনে বিএনপির অনেক নেতা এরই মধ্যে ক্ষেপেছেন। কারণ হার্ডলাইন বলতে সংস্কারপন্থী নেতারা বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দলীয় পদ থেকে সরাতে চাইছেন। এজন্য অনেক নেতার সঙ্গে সংস্কারপন্থী নেতাদের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে।
সংস্কারপন্থী নেতারা বলছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ এবং তার ছেলে তারেক রহমান বিদেশে আছেন। বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী নির্বাচনমুখী। কিন্তু খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও তারেক রহমানের বিদেশে বসে থেকে রাজনীতি আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে কোনো সুফল আনবে না। সুতরাং বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে। কারণ, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দিকে চেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা আর কতদিন অপেক্ষা করবে।
বিএনপির অপর একটি সূত্র জানায়, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে গ্রুপিং চরম আকার ধারণ করেছে। কিছুদিনের মধ্যে দলটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হতে পারে। কারণ, কিছু নেতা ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সুরক্ষা পেতে আপসের রাজনীতি করছেন।
সূত্র আরো জানায়, গত এক মাসে বিএনপির কয়েকটি সভা-সমাবেশে নেতাদের প্রকাশ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, ধাক্কাধাক্কি, মারামারির পর দলের ভেতরে বিভক্তির সুর উঠে। এরই মধ্যে দেশের অনেক জায়গায় গণপদত্যাগের হিড়িক দেখা গেছে। সেইসঙ্গে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় বিএনপি এখন ভাঙনের মুখে।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও তারেকের নেতৃত্বে অনাস্থা পোষণকারীরা মা-ছেলেকে বাদ দিয়ে বিএনপি দখলে নিতে চান। এছাড়া দলের ভেতরে রয়েছে ফখরুল-রিজভীর পৃথক সমর্থক গোষ্ঠী। তারাও খালেদা জিয়া ও তারেককে বাদ দেওয়ার কথা ভাবছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির শীর্ষ এক নেতা বলেন, গয়েশ্বর চন্দ্র, শামসুজ্জামান দুদু, মির্জা আব্বাস, আমানুল্লাহ আমানসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা নিয়ে আমরা দুশ্চিতায় আছি। তারা খালেদা জিয়ার মৃত্যুর অপেক্ষায় আছেন। চেয়ারপার্সনের মৃত্যু হলে নিজেদের বলয় ও নিজ নিজ সমর্থকদের নিয়ে তারা এগিয়ে যেতে চাইবেন। মূলত কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব খুব চরমে পৌঁছেছে। আমাদের আশঙ্কা যে, অচিরেই বিএনপি ভেঙে পাঁচ থেকে ছয় ভাগ হবে।