সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ৮ ১৪৩১   ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্ষমতায় যেতে ফের মানবতাবিরোধী জামায়াতকে পাশে চায় বিএনপি

প্রকাশিত : ০৬:০৫ পিএম, ২৬ মে ২০২২ বৃহস্পতিবার

ক্ষমতায়-যেতে-ফের-মানবতাবিরোধী-জামায়াতকে-পাশে-চায়-বিএনপি

ক্ষমতায়-যেতে-ফের-মানবতাবিরোধী-জামায়াতকে-পাশে-চায়-বিএনপি

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতা দখলের জন্য দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী মানবতাবিরোধী দল জামায়াতকে পাশে চায় বিএনপি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এতদিন প্রকাশ্যে কিছু না বললেও এবার মানবতাবিরোধী এই রাজনৈতিক দল নিয়ে মুখ খুলেছে বিএনপি।

সম্প্রতি গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়নে জামায়াতকে নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। কারণ বরাবরই আন্দোলনের কথা বলে আসছি আমরা। কিন্তু আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়নি। এক্ষেত্রে জামায়াতের অভাববোধ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তাই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিএনপির এমন সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের মানুষ।

বিজ্ঞজনরা বলছেন, বিএনপি আবারো প্রমাণ করলো তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। কারণ জামায়াত বাংলাদেশের স্বাধীনতায় প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছে। পাকিস্তানি হায়েনাদের পক্ষ নিয়ে ৩০ লাখ শহিদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানিতে সহায়তা করেছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য এমন একটি অপশক্তিকে সঙ্গে নিয়ে যারা এগোতে পারে তাদের দ্বারা দেশ কখনোই উপকৃত হবে না।

ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিএনপির হাত ধরেই স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পায় জামায়াত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহণের মাধ্যমে জামায়াতের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন।

জিয়ার সরকার সেই সময় গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার অনুমতি দেন। ১৯৭৯ সালের মে মাসে জামায়াতে ইসলামী পুনরায় দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে। পরবর্তী সময়ে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, দুর্নীতি, লুটপাটসহ নানা অপরাধ সংগঠিত করেছে বিএনপি-জামায়াত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৩ সালে হাইকোর্টের রায়ে নির্বাচন কমিশনে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ বলে ঘোষিত। জামায়াতের প্রায় সব শীর্ষ নেতাই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত। এমন একটি রাজনৈতিক দলের পরম মিত্র বিএনপি। এতদিন জনগণের চাপে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক পরিষ্কার না করলেও এবার বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে জানালো- আগামী নির্বাচনের আগে জামায়াতকে তাদের দরকার। জামায়াতকে ছাড়া তারা আন্দোলন করতে পারছে না। আর এমন দলকে সঙ্গে নিয়ে যারা রাজনীতি করে তারাও দেশবিরোধী অপশক্তি হিসেবেই জনসাধারণের কাছে বিবেচিত হবে।