সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ৮ ১৪৩১   ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

নিজেদের মধ্যে আস্থা সংকটে ভুগছে বিএনপি নেতাকর্মীরা

প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ১৮ মে ২০২২ বুধবার

নিজেদের-মধ্যে-আস্থা-সংকটে-ভুগছে-বিএনপি-নেতাকর্মীরা

নিজেদের-মধ্যে-আস্থা-সংকটে-ভুগছে-বিএনপি-নেতাকর্মীরা

প্রায় ১৫ বছর ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি ক্ষমতায় আসতে নানা রকম ছলচাতুরি আর সহিংসতার পথ অবলম্বন করায় মামলা ও গ্রেফতারে নেতাকর্মীদের নাজেহাল অবস্থা। 

বলা যায় জনগণ থেকে একঘরে হয়ে রয়েছে দলটি। হাজার বেড়াজালে দলটি এখন ভঙ্গুর প্রায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের পর আরো চাপে পড়েছে দলটি। সবমিলিয়ে এখন কঠিন সংকটের সম্মুখীন দলটি। এ অবস্থায় বর্তমান সংকট কাটিয়ে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বিএনপি। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে আস্থার সংকটে ভুগছে দলটির নেতাকর্মীরা। 

গত রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে নিজেদের মধ্যে আস্থার সংকট এবং সন্দেহর কথা জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেছেন, অনেকেই ঝরে যাবে। অনেকেই দালালি করবে, অনেকেই ষড়যন্ত্রের শিকার হবে। আবার অনেকেই লোভে পড়বে।

এছাড়াও রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গত শনিবার ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন বলেছেন, আমার কানে একটা কথা এসেছে- আমাদের দলের মধ্যে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। হালুয়া-রুটি দেবে, এই লোভে কিছু লোক চলে যাবে। যদিও আমি এ ধরনের লক্ষণ দেখি না। তারপরও বলতে চাই, আপনারা যদি হালুয়া-রুটির লোভে চলে যান, দলের সঙ্গে বেইমানি করেন, এই বেইমানদের জায়গা বাংলাদেশের মাটিতে হবে না।

আরো পড়ুন> শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

বিএনপির নেতারা বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হলে ২০ দলীয় জোট ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছিল এবং নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু যে প্রত্যাশা নিয়ে ২০ দলীয় জোট ঐ ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছিল সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বরং তারা ষড়ষন্ত্রের মধ্যে পড়েছিল বলে দলের অধিকাংশ নেতা মনে করেন। তাদের অনেকের মতে ড. কামাল হোসেন সে সময় ক্ষমতাসীনদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে। আর তাদেরই পরিকল্পনা অনুযায়ী ড. কামালের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় কিছু নেতার ব্যক্তি স্বার্থে বিএনপি ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছিল। যা দলটির জন্য সমীচীন হয়নি বলে মনে করেন দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। 

এই নিয়ে বিএনপিতে মেরুকরণও তৈরি হয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এবারো বিভিন্ন জোট গঠনের কথা ভাবছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। ফলে এবারও হয়তো স্বার্থন্বেষী কিছু নেতা আগের পথে পা বাড়াবে বলে শঙ্কা করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এই নিয়ে দলের বেশ কয়েকজন নেতার প্রতি সন্দেহ-অবিশ্বাস বাড়ছে বিএনপিতে।
 
বিএনপি সংশ্লিষ্টরা বলছে, যাদের সন্দেহ করা হচ্ছে তাদের মধ্যে বিএনপির সাবেক একাধিক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী আছেন। এমনকি স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতার নামও এই তালিকায় রয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। শুধু বিএনপিতে নয়, ২০ দলীয় জোটের একাধিক শরিকও রয়েছে এই সন্দেহের তালিকায়।

বিশ্লেষকদের মতে, ভুল রাজনীতির কারণে বিএনপি এখন ‘চোরাগলিতে’ আটকে গেছে। দলের ভেতর বিভিন্ন ধরনের সংকটে টালমাটাল দলটি। সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানো চেষ্টা করলেও সুবিধা করতে পারছে না দলটি বরং আরো কঠিন হয়ে পড়ছে।