দুই নেতার তর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা পণ্ড
প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ১৫ মে ২০২২ রোববার
দুই-নেতার-তর্কে-বিএনপির-স্থায়ী-কমিটির-সভা-পণ্ড
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়ে চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। বৈঠকে লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বলে গুলশান সূত্রে জানা গেছে।
তবে দলীয় সিদ্ধান্তহীনতা, ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে পথ চলা, জাতীয় সরকারের কথা বলে সে উদ্যোগ গ্রহণ না করার সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দেওয়ায় বৈঠকটি পণ্ড হয়ে যায় বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দলের অচলাবস্থার জন্য মির্জা ফখরুলকে সরাসরি দায়ী করলে বৈঠকের শুরুতেই হইচই বেধে যায়। তিনি বলেন, কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার বদলে হামলা-মামলা থেকে বাঁচতে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির একটি অংশ খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।
আমীর খসরু মাহমুদ এমন অভিযোগ তুললে বৈঠকে দুটি পক্ষ সৃষ্টি হয়। এ সময় দলকে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল করে রাখা, নেতৃত্ব ছাড়তে অনীহা প্রকাশ, বিএনপিকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে আমীর খসরু অভিযোগ করলে পরিস্থিতি আরো বিগড়ে যায়।
প্রত্যুত্তরে আমীর খসরুকে বিভক্তি সৃষ্টিকারী হিসেবে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। দলের সিনিয়র নেতাদের এমন কর্মকাণ্ড দেখে এ সময় স্কাইপে নীরবতা পালন করেন তারেক রহমান। অনেকটা হতবাক হয়ে দলের দুর্দশা অনুমান করে অভিমান নিয়েই তারেক চুপচাপ থাকেন বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করে।
বিএনপির এমন বিভক্তি এবং দোষারোপের রাজনীতিতে হতাশা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুকে চুপ করিয়ে দেন তারেক।
এ সময় তারেক বলেন, আপনারা একে অপরকে দোষারোপ করেই বিগত ১৫ বছর পুরোটা সময় ব্যয় করলেন। আপনারা পদ আঁকড়ে ধরে রাখতে বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে চাপে রেখেছেন। ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’-এর মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে যে, খালেদা জিয়ার জন্য কেউ বিএনপি করেন না। সবাই পদ ও ক্ষমতা প্রয়োগের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আগামীতে সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৈঠক আয়োজন করে তাকে অনলাইনে যুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে লাইন কেটে দেন তারেক।
বৈঠকে বিশৃঙ্খলার বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, নির্ধারিত কোনো ইস্যুতে আলোচনা হয়নি। এজেন্ডার বাইরে আলোচনা হওয়ায় কিছুটা মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল। আসলে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বৈঠকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অবিশ্বাসের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে কেউ কাউকে বিশ্বাস না করতে পারায় এমনটা হয়েছে।