বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বৃহত্তর ঐক্য নয়, বিএনপির লক্ষ্য রাজনৈতিক মোর্চা

প্রকাশিত : ০৩:০৫ পিএম, ১৪ মে ২০২২ শনিবার

বৃহত্তর-ঐক্য-নয়-বিএনপির-লক্ষ্য-রাজনৈতিক-মোর্চা

বৃহত্তর-ঐক্য-নয়-বিএনপির-লক্ষ্য-রাজনৈতিক-মোর্চা

প্রতিটি নির্বাচনের আগেই রাজনৈতিক ঐক্য গঠন বিএনপির পুরাতন রাজনৈতিক কৌশল। রাজনৈতিক জোট ছাড়া নির্বাচন বিএনপির কাছে অসম্ভব বিষয়। কেননা তারা কখনো জোটের রাজনীতি ছাড়া একা একা চলতে পারে না। তাই চার দলীয় জোট, ২০ দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সর্বশেষ বিএনপির এবারের লক্ষ্য রাজনৈতিক মোর্চা বা মঞ্চ গঠন করা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগে বিএনপির রাজনীতিতে জোট গঠনের হিড়িক পড়ে যায়। ছোট বড় নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত দল একত্রে জোট গঠন করে থাকে বিএনপি। 

এর পেছনে কিছু উদ্দেশ্য থাকে। এতে কিছু লাভ আছে। নির্বাচনে জেতা যেমন অনেকটা সহজ হয়। আবার এটি একটি রাজনৈতিক কৌশলও। তাই এই কৌশলের অংশ হিসেবে প্রতিটি নির্বাচনের সময় বিএনপি জোট গঠন করে থাকে।  

কথিত বিরোধী দল বিএনপি ও গণফোরামসহ ছোট কয়েকটি দল নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল। এর নেতৃত্বে ছিল ড. কামাল হোসেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে রাজনীতিতে চমক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ বর্তমানে আছে কী নেই- সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে পারছেন না খোদ এর উদ্যোক্তারাই। কার্যত এই ফ্রন্ট এখন আর নেই, বর্তমানে এটা অকার্যকর। কারণ ফ্রন্টের মূল শরিক বিএনপি মনে করছে ঐক্যফ্রন্ট ছাড়াই তারা এখন রাস্তায় নামতে পারছে, ফ্রন্টের কোনো গুরুত্ব এখন আর তাদের কাছে নেই। এছাড়া নির্বাচন এবং আন্দোলনের কৌশল ও সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রশ্নে পরস্পরকে দায়ী করে আসছে ঐক্যফ্রন্ট। শুরুতে জোট গঠন নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তা স্তিমিত হয়ে পড়ে।

২০২৩ সালের শেষ নাগাদ অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকায় ও দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন সফল করতে ছোট এবং বড় দলের নেতাদের নিয়ে ‘ঐক্যজোট’ বাঁধতে উদ্যোগ নিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু কাদের নিয়ে এই ঐক্য? কে হবেন প্রধান নেতা? জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ ইত্যাদি নিয়ে তৈরি হয় নানা বিতর্ক। ফলে আপাতত দৃষ্টিতে বিএনপির এই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। ফলে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তরী পার হতে এবার একটি রাজনৈতিক মোর্চা বা মঞ্চ গড়ে তুলতে তৎপর হয়েছে দলটি।

এর অংশ হিসেবে গত ১০ মে গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ে দলগুলোর নেতারা বৈঠক করেছেন। দলগুলো হচ্ছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এর মধ্য কেউ কেউ গণতান্ত্রিক বাম জোটেরও সদস্য। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিকও আছে। এর মধ্যে বেশ কিছু দল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ঐক্যজোট এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। ফলে নতুন জোট রাজনৈতিক মোর্চা বা মঞ্চ এর স্থায়ীত্ব নিয়ে সর্বত্র প্রশ্ন উঠেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যখন জোট গঠন করা হয় তখন এর পেছনে নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকা উচিত। নানা কারণে জোট হতে পারে। আর সেই জোট থেকে দেশবাসীকে একটি তথ্য জানানো প্রয়োজন, দেশের মানুষের কাছে তাদের একটি কমিটমেন্ট থাকা দরকার। কিন্তু এখন যারা জোট করছেন তাদের তেমন কোনো লক্ষ্য দেখা যায় না। ফলে নতুন এই জোট কতদিন স্থায়ী হবে এই বিষয়ে প্রশ্নের অবকাশ থেকেই যায়।