কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়সারা বক্তব্যে বিরক্ত বিএনপির তৃণমূল
প্রকাশিত : ০৮:০৫ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২২ সোমবার
কেন্দ্রীয়-নেতাদের-দায়সারা-বক্তব্যে-বিরক্ত-বিএনপির-তৃণমূল
রাজনীতির মাঠে এতটুকু জোয়ারও তৈরি করতে পারেনি দলটির কোনো আন্দোলন। দলটিকে নেতৃত্ব সংকট চরমভাবে ভোগাচ্ছে। ফলে দলের তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। এই হতাশাকে আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রের অযাচিত কিছু সিদ্ধান্ত।
সম্প্রতি রাজধানীর লেডিস ক্লাবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) আয়োজিত এক দোয়া ও ইফতার মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের ‘রোজা গেলে বুঝবেন আন্দোলন কাকে বলে’ এমন বক্তব্যে খোদ বিএনপির তৃণমূলের একটি অংশ বিরক্তি প্রকাশ করেছে।
তারা মনে করছে মির্জা আব্বাসের এ ধরনের বক্তব্য দায়সারা ছাড়া আর কিছু নয়। কেন্দ্রীয় অন্য নেতাদের ধারাবাহিক বক্তব্যের ফসল মির্জা আব্বাসের এই বক্তব্য।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগ এই প্রথম নয়, অনেক আগে থেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগ রয়েছে। তৃণমূলের এ ধরনের প্রতিক্রিয়া জানানোর বেশ কিছু যৌক্তিক কারণ আছে বলে মনে করছেন তারা।
বেশ কিছু দিন আগে এক অদৃশ্য কারণ দেখিয়ে বিএনপি একাধিক সিনিয়র নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান রঞ্জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর মাস খানেক আগে একই অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রার্থী বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার এবং তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীতে সমাবেশ করে সরকার পতনের ডাক দেওয়ায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে শোকজ করে বিএনপি। এছাড়া তৃণমূলের বিভিন্ন জায়গায় নেতাকর্মীদের বহিষ্কারের ঘটনা ঘটছে। এ সমস্ত ঘটনা নিয়ে দলটির মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। দলের চলমান সংকটে সবাইকে নিয়ে যখন ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার তখন ত্যাগী নেতাকর্মীরা নিজ দলে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। অনেকে আত্মসম্মান রক্ষার্থে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। এসব কারণে দলটির কোনো আন্দোলনই রাজনীতিতে জোয়ার সৃষ্টি করতে পারেনি।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএনপি এখন চরম অগোছালো পর্যায়ে রয়েছে। বহুমুখী সমস্যায় নিমজ্জিত দলটি এখন অস্তিত্বে সংকটে পড়েছে। এমতাবস্থায় দলকে চাঙ্গা না করে বা দলকে না গুছিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে চাওয়া অস্ত্র ছাড়া শত্রুকে মোকাবিলা করার শামিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।