গ্রুপিংয়ে বিপর্যস্ত বিএনপি
প্রকাশিত : ০৫:০৫ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২২ বৃহস্পতিবার
গ্রুপিংয়ে-বিপর্যস্ত-বিএনপি
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দলের কার্যক্রম থেকে ছিটকে পড়ার পর থেকেই দলের মধ্যে গ্রুপিং বেড়েছে। এর সূত্রপাত হয় তার মুক্তি আন্দোলন নিয়ে। আর খালেদার মুক্তি আন্দোলনে তারেক রহমানের নীরব ভূমিকা যেন আগুনে ‘ঘি’ ঢেলে দেয় দলটির বিভক্তিতে। আর এই বিভক্তির কারণেই নেতাদের মাঝে ঐকমত্যের অভাব দেখা দেয়। ফলে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুখে আন্দোলন আন্দোলন বলে ফেনা তুললেও সাড়া নেই নেতাকর্মীদের। কারণ, তিনি দলের মহাসচিব হলেও তার ডাকে ৫০ জন নেতাকর্মীও সাড়া দেয় না। তাই তিনি দলীয় প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন করে যাচ্ছেন।
দলটির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বিএনপিতে নেতার অভাব নেই সত্য, গ্রুপিংও আছে- এসব অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তারেকপন্থী আর খালেদাপন্থীদের দ্বন্দ্বে এখন দলের মধ্যে গ্রুপের সমারোহ। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া নেতা রয়েছেন অনেক। তারেক রহমানের অনেক হঠকারী সিদ্ধান্তে বিভক্তি আরো বেড়েছে। সামান্য কারণেই সিনিয়র নেতাদের শোকজ করা হয়। এসব কারণে বিভক্ত নেতারা তাদের অনুসারীদের নিয়ে কেউ পদত্যাগ করছেন, কেউবা রাজনীতি ছাড়ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগে নীরবে দল থেকে বেরিয়ে গেছেন অসংখ্য সিনিয়র নেতা। কেন্দ্রীয় নেতারা তাদেরকে দলে ফেরানোর চেষ্টা করলেও তারা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়।
মহানগর বিএনপির কমিটি নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে মহানগরের নেতাদের। ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করায় হাবীব উন নবী খান সোহেলের মতো একাধিক নেতা তাদের অনুসারীদের নিয়ে বিএনপির রাজনীতি থেকে দূরে রয়েছেন।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বিভিন্ন কারণে তারেকের রোষানলে পড়েন। সেই থেকে বিএনপির রাজনীতি দূরে রয়েছেন তিনি।
আরো জানা যায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দ্বন্দ্ব চরমে। রিজভী চান মহাসচিবের পদ আর ফখরুল তা ছাড়তে নারাজ। আর রিজভী সবসময়ই দলীয় কর্মসূচি বা বিশেষ দিবস তার অনুসারীদের নিয়ে আলাদাভাবে উদযাপন করেন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালেদা রাজনীতি থেকে দূরে থাকায় নেতৃত্ব তারেক রহমানের হাতে। তার অপরিপক্ব নেতৃত্বের কারণেই দল এই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। বিভক্তি বাড়ায় নেতারা আলাদা হয়ে পড়ছেন। ফলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর ঐক্যবদ্ধ না হতে পারলে বিএনপির অস্তিত্ব ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাবে।