ভাস্কর্যের পাহাড় ঊনকোটি
প্রকাশিত : ০৩:৫৫ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০২২ বুধবার
ভাস্কর্যের-পাহাড়-ঊনকোটি
ত্রিপুরার মোটামুটি তিন দিক ঘিরেই আছে বাংলাদেশ। একদিকে আসাম ও মিজোরাম। বাংলাদেশের সঙ্গে বেশি সীমান্তঘেরা থাকায় এখানকার ভাষা এবং জীবনযাপনে বেশি সাদৃশ্য আছে বাংলাদেশের সঙ্গে। অনেকেরই পূর্বপুরুষ বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ছিল। সেই সূত্রে প্রায় লতাপাতায় আত্মীয়-স্বজন আছে অনেকেরই।
পাহাড়ের সিঁড়ি ধরে কিছুটা উপরে উঠেই চোখে পড়বে বহুল আকাঙ্ক্ষিত সেই পাথুরে ভাস্কর্যের পাহাড়। পাথুরে পাহাড় খোদাই করে তৈরি করা শত শত বছরের পুরোনো এসব ভাস্কর্যের দিকে কেবল হা হয়েই তাকিয়ে থাকতে হয়। কী অসাধারণ মানুষের হাতের কাজ। মানুষ চাইলে আসলে কতো অসাধ্যই না সাধন করতে পারে।
ঊনকোটি মানে কোটির চাইতে এক কম। আগরতলা শহর থেকে ১৭৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই রহস্যময় পাহাড়ি এলাকা। ঊনকোটি নিয়ে নানা মিথ ও কাহিনি প্রচলিত। এর মধ্যে সর্বাধিক প্রচলিত হলো, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ভগবান শিব কাশি যাওয়ার পথে এখানে থেমেছিলেন। তিনিসহ দেবতাদের সংখ্যা ছিল এক কোটি। তাদের সবার রাত কাটানোর ব্যবস্থা হয় এই পাহাড়েই। পরের দিন সকালে ফেরার সময় ক্লান্ত দেবতাদের কারো ঘুম না ভাঙায় শিব বিরক্ত হন। তার অভিশাপেই ঊনকোটি দেবতা পাথর হয়ে যায়।
তবে ঐতিহাসিকদের মতে, ঊনকোটির এই ভাস্কর্যগুলোর সৃষ্টি অষ্টম অথবা নবম শতকে। পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা মূর্তিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিব এবং সুবিশাল কালভৈরবের মূর্তি। এ ছাড়া আরো দেখা মেলে গণেশ, দুর্গা, বিষ্ণু, রাম, রাবণ, হনুমানের মূর্তি। কালের বিবর্তনে বেশ কিছু ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও বেশির ভাগই এখনো অক্ষত রয়েছে
ত্রিপুরার ঊনকোটি বাংলাদেশের মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সীমান্তবর্তী। উন্নয়নের ছোঁয়া খুব যে লেগেছে তা নয়। যাওয়ার পথের রাস্তাটাও অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশ খারাপ। ঊনকোটি যাওয়ার পথেই দেখা যাবে নারীরা দলবেঁধে কলসি কাঁধে নিয়ে যাচ্ছে। এদিকে সুপেয় পানির বেশ সংকট।