মঙ্গলবার   ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ৯ ১৪৩১   ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পদ হারানোর আতঙ্কে বিএনপি নেতারা

প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০২২ রোববার

পদ-হারানোর-আতঙ্কে-বিএনপি-নেতারা

পদ-হারানোর-আতঙ্কে-বিএনপি-নেতারা

দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজের অজুহাতে গত এক বছরে শতাধিক নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

এ পরিস্থিতিতে বিএনপিতে বহিষ্কার আতঙ্ক চলছে, আতঙ্ক চলছে পদ হারানোরও। কেননা এরই মধ্যে কাউকে কাউকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।  

তবে বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এ ধরনের কার্যক্রম বিএনপির কফিনে শেষ পেরেক ঠোকারই শামিল। কারণ বেছে বেছে জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বহিষ্কারের ফলে কর্মীদের মধ্যে ভুল বার্তা যাচ্ছে এবং তারা কাজ করার উদ্যোম হারিয়ে ফেলছেন। 

এছাড়া এমন অবস্থা চলতে থাকলে বিএনপি নেতারা তারেকের ভয়ে হাত-পা গুটিয়ে ঘরে বসে থাকবে। কেউ কোনো কাজ করবে না। কে কি সমালোচনা করলো, না করলো সেটি পরের বিষয়, কিন্তু তারেক তার বহিষ্কার নাটক অব্যাহত রেখেছেন। সামনে আরো কয়েকজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে বা দলে তারা পদ হারাতে পারেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এদের মধ্যে শওকত মাহমুদকে এরইমধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং এর পরে তিনি দলের পদ হারাবেন বলে মোটামুটি নিশ্চিত করেছে বিএনপির একাধিক নেতা। 

শওকত মাহমুদ বিএনপির নেতা ছাড়াও সাংবাদিক হিসেবে অনেক আলোচিত এবং প্রশংসিত। তাছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবে কয়েকবার সভাপতি এবং সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএনপিপন্থী সাংবাদিকদের মধ্যে তার বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে। এ রকম একজন ব্যক্তিকে যদি বহিষ্কার করা হয়, তাহলে সেটি সাংবাদিক সমাজের ওপর প্রভাব পড়বে বলে অনেকে মনে করছেন।

এছাড়াও তারেক জিয়ার দৃষ্টির মধ্যে রয়েছেন মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন। তারও যেকোনো সময় পদ কেড়ে নেয়া হতে পারে বলে বিএনপির মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। তাকে এর আগেও একবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এখন তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, তা অবশ্য স্পষ্ট জানা যায়নি। 

মির্জা আব্বাসের সঙ্গে তারেক জিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ। এর আগেও মির্জা আব্বাসকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ সম্পর্কে মির্জা আব্বাস চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছিলেন। যদিও পরে তিনি মন্তব্যটি প্রত্যাহার করেন। কিন্তু তারপরও এটি বিএনপির মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছিল। তবে ইলিয়াস আলীর সম্পর্কে মন্তব্য মূল কারণ নয়। বিএনপি নেতারা মনে করছেন যে, তারেক জিয়ার অপছন্দের তালিকায় মির্জা আব্বাসেরও নাম আছে। সে কারণে মির্জা আব্বাসও যেকোনো সময় বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদ হারাতে পারেন। 

দলীয় গোপন সূত্রে জানা গেছে, নেতাকর্মীদের অনেকেই বহিষ্কার আতঙ্কে ভুগছেন এবং তাদের যেকোনো সময় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। 

বিএনপির কেউ কেউ মনে করছেন যে, এটি দলের শৃঙ্খলার জন্য করা হচ্ছে। তবে অধিকাংশ নেতাকর্মীরা মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে বিএনপিতে তারেক জিয়া একটি ভুল বার্তা দিচ্ছেন এবং নেতাকর্মীদের হতাশা আরো বাড়িয়ে তুলছে।