মেধাশূন্য রাজনৈতিক দলে পর্যবসিত বিএনপি
প্রকাশিত : ০৩:০৫ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০২২ শনিবার
মেধাশূন্য-রাজনৈতিক-দলে-পর্যবসিত-বিএনপি
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একটা সময় ছিল অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ, ফরহাদ মজহার, শফিক রেহমান, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মনিরুজ্জামান মিঞার মতো ব্যক্তিরা বিএনপির বুদ্ধিভিত্তিক রাজনীতির চর্চা করতেন। তারাই বিএনপির থিংক ট্যাংক ছিলেন। কিন্তু এখন ক্রমশ বিএনপি বুদ্ধিজীবী শূন্য হয়ে গেছে।
বিএনপিপন্থী যে সমস্ত বুদ্ধিজীবীরা বিভিন্নভাবে আলোচিত ছিলেন তারাও এখন নিজেদের নানা কারণে গুটিয়ে নিয়েছেন। তাদের সঙ্গে বিএনপির সুস্পষ্ট দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আর এ কারণেই বিএনপি এখন মেধাশূন্য একটি রাজনৈতিক দলে পর্যবসিত হচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন।
বিএনপি এখন কিছু সাইবার সন্ত্রাসীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে- এমন অভিযোগও উঠছে বিএনপির পক্ষ থেকে। এমনকি একসময় যারা বিএনপিতে প্রভাবশালী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, দলের কেউ এখন তাদের কোনো খোঁজখবর রাখছেন না। কিন্তু কেন বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে এই বিচ্ছেদ, তা নিয়ে খোদ বিএনপিতে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
জানা গেছে, বিএনপির প্রভাবশালী বুদ্ধিজীবীদের একজন ছিলেন যায়যায়দিন পত্রিকার সম্পাদক শফিক রেহমান। খালেদা জিয়ার বক্তৃতা-বিবৃতি তিনি লিখে দিতেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তার প্রভাব-প্রতিপত্তি অনেক বেড়ে যায়। এ রকম অবস্থা অব্যাহত থাকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। কিন্তু এখন তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। এখন কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নিজেকে সংশ্লিষ্ট রাখছেন না। বরং বিএনপির সঙ্গে তার এক ধরনের দূরত্ব দেখা গেছে।
বিএনপির অন্যতম বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। খালেদা জিয়ার আস্থাভাজন এ বুদ্ধিজীবী এখন বিএনপির হাসি-ঠাট্টার পাত্র। প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা তার বিরোধিতা করছে। এছাড়া বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমালোচনা করায় নেতাকর্মীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়েছেন তিনি।
মাহমুদুর রহমান পেশায় প্রকৌশলী। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তিনি জ্বালানি উপদেষ্টা হয়েছিলেন। তার প্রভাব প্রতিপত্তি আরো বাড়ে যখন তিনি আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু এরপর নানা অপরাধে তিনি আটক হন এবং আদালত অবমাননার দায়ে দণ্ডিত হয়েছিলেন। সেই মাহমুদুর রহমান এখন মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং বিএনপি থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন।
ফরহাদ মজহার কিছুদিন আগেও বিএনপির অন্যতম বুদ্ধিজীবী ছিলেন। বিশেষ করে ২০১৪ সালের পর থেকে বিএনপির যখন দোদুল্যমান অবস্থা, তখন তিনি বিএনপির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বিএনপির পক্ষে অনেক লেখালেখি করেছিলেন। কিন্তু তিনি নিজেই ব্যক্তিগত কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে বিএনপির সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই বললেই চলে।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীরা বলেন, বিএনপি মূলত একটি ষড়যন্ত্রকারী দল। তারা নিজ স্বার্থে সবাইকে ব্যবহার করে। বিএনপিতে খালেদা জিয়া একজন বুদ্ধিজীবীবান্ধব নেত্রী ছিলেন। তিনি তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ করতেন। কিন্তু দলের ক্ষমতা যখন খালেদা জিয়া থেকে তারেকের কাছে চলে যায়, তখন থেকেই বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। অবমূল্যায়ন আর অবহেলায় বুদ্ধিজীবীরাও বিএনপি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। এর ফলে বিএনপি আজ মেধাশূন্য রাজনৈতিক দলে পর্যবসিত হয়েছে।