বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে বিএনপি

প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২২ শুক্রবার

মেয়াদোত্তীর্ণ-কমিটি-দিয়ে-চলছে-বিএনপি

মেয়াদোত্তীর্ণ-কমিটি-দিয়ে-চলছে-বিএনপি

দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পরপর কাউন্সিল করার বিধান থাকলেও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে বিএনপি। দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সিল নিয়ে কোনো ভাবনা নেই দলটির হাইকমান্ডের। একইসঙ্গে বর্তমানে নির্বাহী কমিটির অর্ধশতাধিক পদও রয়েছে ফাঁকা।

দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় নির্বাহী কমিটির কাউন্সিল হয় ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ। তিন বছর মেয়াদি কেন্দ্রীয় কমিটি পার করেছে অর্ধযুগ বা ছয় বছর। নির্দিষ্ট সময়ে কাউন্সিল না হওয়ায় বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে। 

কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে পদপ্রত্যাশী নেতাদের অভিযোগ রয়েছে যে, দীর্ঘদিন নিজ দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা পালনের পরও স্থায়ী কমিটর নেতারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা রেখেছেন। 

তাদের দাবি, নিয়মিত কাউন্সিল হলে অনেকেই নেতা হওয়ার সুযোগ পেতেন। তারা বলছেন, পদপদবি না পেয়ে অনেকেই দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। এভাবে চলতে থাকলে রাজনীতি থেকে বিদায় নেয়া ছাড়া আর উপায় নেই।

তারা অভিযোগ করেন যে, গত ছয় বছরে বয়সের ভারে ন্যুব্জ ও নিষ্ক্রিয় নেতারা এখন ঘরে বসে আছেন। গত কয়েক বছরে তাদের দেখা পাওয়া যায়নি। এজন্য ছোট পরিসরে হলেও কাউন্সিল করার তাগিদ মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের।

বিএনপির দুই নীতিনির্ধারক জানিয়েছেন, কাউন্সিল নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনার তেমন সুযোগ নেই। তাছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন এখনো অসুস্থ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশের বাইরে। দেশে আসতে অনীহা তার। এ অবস্থায় কাউন্সিল দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই না। নানা কারণে রাজনৈতিক পরিবেশ নিজেদের অনুকূলে না থাকায় কাউন্সিল করা সম্ভব নয়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা নানাভাবে কাউন্সিলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলেও তাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলীয় কোন্দল, অর্থ বাণিজ্য, হাইকমান্ডে সিন্ডিকেট ইস্যুসহ নানাদিক।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের একটি পক্ষ নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাইলেও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার অনুসারী পক্ষ নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন মহাসচিব নির্বাচন করতে চাইছে। 

এক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে চলা এ অচলাবস্থার জন্য নেতাকর্মীরা দায়ী করছেন খালেদাপন্থী নেতা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেকপন্থী নেতা দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে। মির্জা ফখরুল ও রিজভী দ্বন্দ্বে দীর্ঘদিন ধরে না মেটায় বিএনপির কাউন্সিলের সম্ভাবনা নেই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুইজনই দণ্ডিত আসামি। তাদের নেতৃত্বে বিএনপি পুনর্গঠন সম্ভব নয়। এখন যারা দলের নেতৃত্বে আসবে তারা বিএনপি পরিচালনা করবে। কোনো পুতুল প্রতিনিধি কিংবা নেতাদের ওপর ভরসা করতে না পারায় বিএনপির কাউন্সিল হচ্ছে না। এজন্য মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই দলকে পরিচালনা করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা।