ফ্লাইট মিস করলে কী করবেন?
প্রকাশিত : ০২:৫৫ পিএম, ২৪ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার
ফ্লাইট-মিস-করলে-কী-করবেন
প্রথমেই জেনে রাখুন বেশিরভাগ এয়ারলাইন্সেই এমন পরিস্থিতির জন্য বিকল্প ব্যবস্থা আছে। তবে পরবর্তী ফ্লাইটে আসন (‘রিবুক’) পেতে আপনাকে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হবে কি না, সেটি নির্ভর করবে আপনি বিমানবন্দরে কতো দেরিতে পৌঁছেছেন কিংবা আপনার বিলম্বের কথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন কি না তার ওপর।
ফ্লাইট মিস করলে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে লাইফস্টাইল বিষয়ক ওয়েবসাইট লাইফহ্যাকার।
দ্রুত একজন এয়ারলাইন এজেন্টের সঙ্গে কথা বলুন
যদি বুঝতে পারেন বিমানবন্দরে পৌঁছাতে আপনার দেরি হয়ে যাচ্ছে, তাহলে সেটি দ্রুত ওই এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষকে জানান। তাহলে তারা হয়তো বিমানবন্দরে পৌঁছানোর আগেই আপনার জন্য টিকেট ‘রিবুক’ করে রাখতে পারবে। আর যদি বিমানবন্দরে পৌঁছে গিয়ে থাকেন, তাহলে দেরি না করে কোনো এয়ারলাইন এজেন্টকে বিষয়টি জানান।
যাত্রীদের ফ্লাইট মিস করাকে এয়ারলাইনের ভাষায় বলা হয় ‘ফ্ল্যাট টায়ার’। সাধারণত এসব ফ্ল্যাট টায়ার-সংক্রান্ত ঘটনার ক্ষেত্রে ভূক্তভোগী যাত্রী বাড়তি কোনো খরচ ছাড়াই পরবর্তী ফ্লাইটে আসন পেয়ে যান। তবে তার জন্য আপনাকে ওই মিস করা ফ্লাইট ছাড়ার পরবর্তী দুই ঘন্টা বা তার আগেই বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হবে।
তবে, বেশিরভাগ এয়ারলাইনই এই ‘ফ্ল্যাট টায়ার’ নিয়মটি তাদের ভ্রমণ নির্দেশিকায় লিখিতভাবে উল্লেখ করে না। ব্যবসার খাতিরেই বাড়তি খরচ ছাড়া এমন ফ্লাইট বদলের বিষয়টি তারা বাইরে প্রচার করে না। তাই, ‘ফ্ল্যাট টায়ার’ সুবিধাটি পেতে গেলে আপনাকে একটু কৌশলী হতে হবে। কারণ, এসব ক্ষেত্রে আপনার টিকেট রি-বুকিংয়ের বিষয়টি নির্ভর করে নিজের পরিস্থিতি আপনি কতোটা ভালোভাবে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন এজেন্টকে বোঝাতে পারছেন তার ওপর। কোনো এজেন্ট হয়তো আপনার প্রতি সহানুভূতিশীল হবে, আবার কেউ হয়তো কোনো ছাড়ই দেবে না। তাই ভদ্রভাবে এজেন্টকে আপনার সমস্যার কথা বুঝিয়ে বলুন। প্রচণ্ড যানজটের কারণে যদি ফ্লাইট মিস করেন, সেটি এজেন্টকে বলুন।
একই দিনের ফ্লাইট বদলে নিতে করণীয়
যদি ফ্লাইট মিস করেন এবং স্ট্যান্ডবাই সিটের পরিবর্তে আসন পাওয়ার নিশ্চয়তা চান, তাহলে একই দিনে ফ্লাইট বদল করার একটি ব্যবস্থা আছে। প্রত্যেক এয়ারলাইন এ বিষয়ে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলে। যেমন, আপনি যে ফ্লাইটটি বদলাতে চান সেটি বিমানবন্দর ত্যাগ করার আগেই কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে এবং যে ফ্লাইটে যেতে চান সেটিও একই দিনের হতে হবে। আলাস্কা এয়ারলাইনস এ ক্ষেত্রে বাড়তি ৫০ ডলার চার্জ করে। আর আপনি যদি অ্যামেরিকান ও ইউনাইটেডের যাত্রী হন তাহলে আপনাকে বাড়তি ৭৫ ডলার গুনতে হবে।
আপনার মূল ফ্লাইটের নির্ধারিত সময়ের ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত একই দিনে ফ্লাইট বদলাতে পারবেন আপনি। ধরুন আপনি মূল ফ্লাইটের জন্য চেক-ইন করে ফেলেছেন, এমনকি আপনার ব্যাগও চেক করা হয়ে গেছে, সে মুহূর্তে যদি আপনি ফ্লাইট বদলাতে চান কিছু কিছু এয়ারলাইনস আপনাকে সে সুবিধাও দেবে।
কানেকটিং ফ্লাইট মিস করলে বাড়তি খরচ ছাড়াই রিবুক
দীর্ঘ দূরত্বের ভ্রমণে অনেক সময় এক বিমানবন্দর থেকে অন্য বিমানবন্দরে নেমে ফ্লাইট বদলাতে হয়। এটাকে ‘কানেকশন’ আর বদলানো ফ্লাইটটিকে ‘কানেক্টিং ফ্লাইট’ বলে।
যদি প্রথম ফ্লাইটটি দেরিতে ছাড়ার কারণে আপনার কানেক্টিং ফ্লাইটটি মিস হয়, তাহলে সাধারণত ওই এয়ারলাইনই আরেকটি ফ্লাইটের আসনের ব্যবস্থা করে দেয়। কোনো কোনো এয়ারলাইন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘রি-বুকিং’ করে দেয়। আবার কিছু এয়ারলাইনস তা করে না। এ ছাড়া আপনার প্রথম ফ্লাইট ও কানেক্টিং ফ্লাইট যদি ভিন্ন এয়ারলাইনসের হয় সে ক্ষেত্রে আপনার টিকেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘রি-বুক’ হবে না। তাই এসব ক্ষেত্রে ঝুঁকি এড়াতে বিমানবন্দরে নেমেই ফ্লাইট মিস করার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত জানান।
কিছু কিছু বিমানবন্দরের ওয়েবসাইটে টাইম ট্র্যাকার দেওয়া থাকে, নির্দিষ্ট বিমানের যাত্রীদের জন্য। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন আটলান্টা ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর, এখানে টাইম ট্র্যাকার লাগানো আছে যাত্রীদের সেবার জন্য।
আবার বিভিন্ন দেশ বা বিমানবন্দর অনুযায়ী সময়সীমা বেঁধে দেয় বিমান চালনা সংস্থাগুলো। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো বিমানবন্দরে ডোমেস্টিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে বিমান ছাড়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে পৌঁছানোর পরামর্শ দিয়ে থাকে আমেরিকান এয়ারলাইনস, কন্টিনেন্টাল, ডেল্টা ও ভার্জিন আমেরিকা। তবে স্থান বা ফ্লাইটভেদে আরো আগে আসারও পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া বিমান ছাড়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে যাত্রীদের ডিপার্চারে থাকার পরামর্শ দেয় বিমান চালনা সংস্থাগুলো।