দৃষ্টিভঙ্গি ঘোরাতেই বার বার হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নাটক
প্রকাশিত : ০৩:০৫ পিএম, ৭ মার্চ ২০২২ সোমবার
দৃষ্টিভঙ্গি-ঘোরাতেই-বার-বার-হারিছ-চৌধুরীর-মৃত্যু-নাটক
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নাটক যেন কাল্পনিক গল্পকেও হার মানিয়েছে।
সম্প্রতি হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর রহস্য নিয়ে এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে নতুন গল্প মঞ্চস্থ হয়েছে।
ঐ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সম্প্রতি ঢাকার পান্থপথে মাহমুদুর রহমান পরিচয়ের এক মৃত ব্যক্তিই হারিছ চৌধুরী। ফলে এ নিয়ে আবার নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। মৃত্যু নিয়ে একের পর এক বিভ্রান্তিকর এবং অসামঞ্জস্য তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে প্রথম তার ভাই সিলেট বিএনপির সহ-সভাপতি দাবি করেন, হারিছ চৌধুরী লন্ডনে মারা গেছেন। কিন্তু তার এ বক্তব্যের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এরপর হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর জানান যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি মালেক। তিনি এক অবিশ্বাস্য দাবি করে জানান, হারিছ চৌধুরী কখনোই বাংলাদেশ থেকে বের হননি।
এরপর হারিছ চৌধুরীর কন্যা ব্যারিস্টার সামিরা আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, তার পিতা হারিছ চৌধুরী ঢাকায় মারা গেছেন। তার এ কথা কেউ কেউ বিশ্বাস করলেও এখন তা আর বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ মৃত্যু নিয়ে একের পর এক বিভ্রান্তিকর এবং অসামঞ্জস্য তথ্যের ফলে অনেকেই মনে করছেন, ইন্টারপোলের রেড এলার্ট থেকে নিস্তার পেতে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতেই এ মৃত্যুর খবর প্রচার করা হচ্ছে। তাই এখন নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়ে কোন খবরটা সত্য?
আবার তার মেয়ে সামিরা প্রথমে বলেন, তার বাবা হারিছ চৌধুরী বাংলাদেশেই মারা গেছেন। দাফন করা হয়েছে ঢাকার বাইরে। ঢাকা থেকে অনেক দূরে। যেখানে যেতে এক-দেড় ঘণ্টা গাড়ি চালাতে হয়। কিন্তু এখন আবার এ প্রতিবেদনে সামিরা চৌধুরী বলেন, ১৪ বছর যে মানুষটি আত্মগোপনে ছিলেন। নানা ভয় আর আতঙ্ক কাজ করেছে। তবে এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি অধ্যাপক মাহমুদুর রহমানই আমার বাবা হারিছ চৌধুরী। সুইজারল্যান্ডে অবস্থানরত আমার ভাই নায়েম শাফি চৌধুরীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এখন নিজেদের ফাঁদেই নিজেরা পা দিয়েছেন।
তারা বলেন, হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুকে অন্যখাতে প্রবাহিত করার জন্য মাহমুদুর রহমান পরিচয়ে আত্মগোপনে থাকার এক নতুন নাটক সাজানো হয়েছে। আসলে ইন্টারপোলের রেড এলার্টসহ তার বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন, এটিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই এই মৃত্যুর নাটক সাজানো হচ্ছে। কিন্তু একটি মানুষ মারা গেলে তার ডেথ সার্টিফিকেট লাগে। ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া তার সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা, ব্যাংক হিসেব ইত্যাদি কোনকিছুই নিষ্পন্ন করা সম্ভব হবে না। হারিছ চৌধুরী যে উত্তরাধিকার আছে তাদের কী হবে?
অন্যদিকে ইন্টারপোলের রেড এলার্ট থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যও হারিছ চৌধুরীর নামে ডেথ সার্টিফিকেট লাগবে। ফলে এখন নিজেদের তৈরি করা ফাঁদেই নিজেরা পা দিয়ে বরং আরো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন এবং এটাও স্পষ্ট হয় যে হারিছ চৌধুরী আসলে মারা যাননি।