শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জনগণের অভিপ্রায় ও আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত : ০৫:০৫ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রোববার

জনগণের-অভিপ্রায়-ও-আইন-অনুযায়ী-নির্বাচন-কমিশন-গঠন-হয়েছে-ওবায়দুল-কাদের

জনগণের-অভিপ্রায়-ও-আইন-অনুযায়ী-নির্বাচন-কমিশন-গঠন-হয়েছে-ওবায়দুল-কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনগণের অভিপ্রায় ও আইন অনুযায়ী প্রথমবারের মতো একটি নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির ইতিহাসে এটি একটি অনন্য মাইলফলক।

রোববার আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দলটির সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশবাসীর কাছে সংবিধানের আলোকে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তারই ফলশ্রুতিতে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন প্রণীত হয়েছে। আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠনও করেছেন। আমাদের প্রস্তাবিত নাম বাদ পড়লেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত হওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আওয়ামী লীগ নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনের সকল কার্যক্রমকে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছে। এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করি, নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন। দেশের মানুষ যাতে ভোটের মাধ্যমে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারে সে বিষয়টি সুনিশ্চিত করবেন। নতুন নির্বাচন কমিশনে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই কর্মজীবনে দক্ষতা, সততা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। আমাদের প্রত্যাশা, তারা অতীতে যে যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখিয়েছেন, ভবিষ্যতেও সেভাবে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করবেন। শুধু রাজনৈতিক ফায়দার জন্য এ কমিশনকে নিয়ে কোনো প্রকার অযৌক্তিক ও বিতর্কিত মন্তব্যের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত না হয়ে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। চলমান গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কমিশন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির মাধ্যমে সংবিধান অনুযায়ী আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত নির্বাচন কমিশন এরইমধ্যে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এ কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচনগুলো যাতে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্য সব রাজনৈতিক দলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা আশা করি, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল সে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবে।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজ সাধুবাদ জানালেও বিএনপি নেতারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে চিরাচরিতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নেতিবাচক ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য অব্যাহত রেখেছেন। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির প্রতি দেশের জনগণের কোনো প্রকার আগ্রহ নেই। তারা সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন ও হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। এ রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের ফলেই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ভয় পায়। তাদের লক্ষ্য নির্বাচন নয়, হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা। দেশের জনগণ তাদের বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপিকে এদেশের জনগণ কেন ভোট দেবে? তাদের নেতা কে? দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কী প্রধানমন্ত্রী হতে পারে? তাদের প্রধান দুই নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সাজাপ্রাপ্ত আসামি তো নির্বাচনে করতে পারে না। তাহলে কার নেতৃত্বে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে? এ প্রশ্নের উত্তর বিএনপি জানে না। তাই বিএনপি'র দণ্ডপ্রাপ্ত শীর্ষ নেতাদের নির্দেশেই তারা আজ নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি অতীতে ক্ষমতায় এসে জনগণের কোনো কল্যাণ করেনি। দেশের কোনো উন্নয়ন করেনি। তারা দেশ পরিচালনার নামে দেশের মানুষের ওপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়েছে। হাওয়া ভবন খুলে জনগণের সম্পদ লুটপাট করেছে এবং দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি বারবার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। সংবিধানকে হত্যা করেছে। গণতন্ত্রের রীতিনীতিকে লঙ্ঘন করেছে। সংবিধানকে বারবার ভূলুণ্ঠিত করে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল করেছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং গণ রায়কে উপেক্ষা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে বারবার ষড়যন্ত্র করেছে। বিএনপি কখনো নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করেনি। বিএনপি জন্মলগ্ন থেকে সংবিধান ও আইনের বিধি-বিধান ভূলুণ্ঠিত করেছে। রাষ্ট্র ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে উন্মাদ ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিএনপি বিদেশি প্রভুদের ওপর ভর ও ষড়যন্ত্র করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চায়। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব ষড়যন্ত্র রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।