বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার শর্ত ‘আজিজ কমিশন’
প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার
বিএনপির-নির্বাচনে-যাওয়ার-শর্ত-আজিজ-কমিশন
জানা গেছে, হাইকোর্টের সাবেক এম. এ. আজিজ নেতৃত্বধানী নির্বাচন কমিশন বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দেশে ভুয়া ভোটার তৈরি করে। সেই ভুয়া ভোটারের মাধ্যমে নিজেদের জয় নিশ্চিতের পাঁয়তারা করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলটি। কিন্তু দেশের গণতান্ত্রিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সেই কমিশনের অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
সূত্র বলছে, বর্তমানে আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের বুলি আওড়াচ্ছে। দলটির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছাড়া অনেক দল নতুন আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত। কিন্তু বিএনপি নিজেদের ওপরই আস্থা রাখতে পারছে না। যার ফলে নির্বাচনে যেতে তারা কোনোভাবেই প্রস্তুত নয়। এজন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আজিজ কমিশনের মতো একটি কমিশন গঠনই হলেই কেবল নির্বাচনে যোগ দেবেন।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একজন বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা বলেন, বিএনপির যদি তাদের অতীতের কুকর্মের জন্য অনুশোচনা করতো তাহলে হয়তো দলটির আজকের এ পরিণতি হতো না। আর নির্বাচন কমিশন নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া যা করেছে তা অন্য কেউ করার সাহস পায়নি।
বিএনপির বহিষ্কৃত এ নেতা বলেন, এম. এ. আজিজ নেতৃত্বধানী নির্বাচন কমিশনের সময় যেসব বাড়িতে আওয়ামী লীগের ভোটার ছিল তাদের অধিকাংশের নাম তালিকা থেকে লাল কালি দিয়ে কাটা হয়েছিল। সারাদেশের আওয়ামী লীগের কর্মীদের ভোটার তালিকা থেকে কৌশলে বাদ দেওয়া হয়েছিল। নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা নিজে বলেছিলেন যে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তিনি এ কাজ করেন। দেড় দশক আগে গোপন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতেই বিএনপি-জামায়াত বিচারপতি এম. এ. আজিজকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বানিয়েছিল। খালেদা জিয়ার আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে তিনি দেড় কোটি ভুয়া ভোটার বানিয়েছিলেন। তার সময়ে সবচেয়ে বেশি পক্ষপাত ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে এম. এ. আজিজ খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপির মনোনয়নও চেয়েছিলেন। তাই এবারো বিএনপি চাচ্ছে আজিজ কমিশনের মতোই একটি নির্বাচন কমিশন আসলে সুবিধা হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটি সবার থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবিত ৩২২ জন থেকে ১০জনকে বাছাই করেছে। শুধুমাত্র বিএনপি-জামায়াত ও তাদের মদদপুষ্ট রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়া সার্চ কমিটিতে সবাই নাম দিয়েছে। যেকোনো নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মানসিকতা নেই। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন দল হিসেবে বিএনপি সব সময় নির্বাচনে হারার সম্ভাবনা থাকে। নির্বাচনে হারার লজ্জাকে ঢাকতেই বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনে নাম প্রস্তাব করেনি। কারণ, নাম প্রস্তাব করলেই নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নিতেই হবে।
আজিজ কমিশনের মতো কমিশন পেলে বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার শর্তের ব্যাপারে তারা বলেন, দুর্নীতি ও অনিয়ম যুক্ত কমিশন কখনোই নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারে না। আইন অনুযায়ী গঠিত কমিশনের মাধ্যমেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।