জামায়াতের জোট ছাড়তে চাপ, বেকায়দায় বিএনপি
প্রকাশিত : ১২:০৫ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার
জামায়াতের-জোট-ছাড়তে-চাপ-বেকায়দায়-বিএনপি
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম অপপ্রচার ও বিষোদগার করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যেন আন্তর্জাতিক মহল সোচ্চার হয়, সেই চেষ্টা করছে বিএনপি। আর এ চেষ্টার অংশ হিসেবে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে।
এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নেও বিভিন্ন রকমের তৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। যুক্তরাজ্যও তাদের সক্রিয় কর্মকাণ্ড চোখে পড়ার মতো। এর পাশাপাশি ভারতের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য নতুন করে চেষ্টা করছে দলটি।
অনেকেই মনে করেন, বিএনপির এমন অপপ্রচার এবং অপতৎপরতার কারণেই সম্পতি প্রশাসনিক কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখেই এসব কর্মকাণ্ড। তবে এসব তৎপরতায় আওয়ামী লীগের ক্ষতির চেয়ে রাষ্ট্রের ক্ষতি বেশি করছে।
এছাড়াও বাংলাদেশে গুম নিয়ে বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় যে অপপ্রচার চালিয়েছে তাতে এরই মধ্যে দেশের অনেকটা ক্ষতি হচ্ছে। আর বিএনপির মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিটি জোরদার করা।
আরো পড়ুন>>> সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই বিএনপি-জামায়াতের কাজ: নাছিম
বিভিন্ন দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বর্তমান সরকারকে অগণতান্ত্রিক বলে অভিহিত করেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্রের কাছে অনুরোধ করেছেন যে, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প নেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিএনপির এসব দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কোনো দেশই। বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং ভারতসহ অনেকেই বিএনপিকে আগে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণের আহ্বান জানিয়েছে।
বিএনপিকে পশ্চিমা দেশগুলো জানিয়েছে যে, দাবি-দাওয়া উত্থাপনের আগে বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। আর এ আহ্বানের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিএনপি এখন প্রকাশ্যে জামায়াতের সঙ্গে কোনো রকম বৈঠক করছে না। ২০ দলীয় জোটকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য এতে সন্তুষ্ট নয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বলা হয়েছে যে, আগামী নির্বাচনে ভূমিকা রাখার আগে তারা বিএনপিতে গণতন্ত্রের চর্চা দেখতে চান এবং বিএনপি যে কট্টর মৌলবাদী এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আঁতাত করে না, এ অবস্থান পরিষ্কার করা দরকার। এজন্যই তারা বিএনপিকে প্রস্তাব দিয়েছে, তারা যেন অনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের ঘোষণা দেয়। এ সম্পর্ক ত্যাগের ঘোষণার আগে বিএনপির কোনো আহ্বানেই সাড়া দিতে রাজি নয় পশ্চিমা দেশগুলো।
তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো অবস্থান দেখা যায়নি। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি যদি উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা পেতে চায়, তাহলে অবশ্যই তাকে জামায়াতের সংশ্রব ত্যাগ করতে হবে। কিন্তু বিএনপি কি সেটি করতে পারবে? এ বিষয়টি এখন জনমনে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।