লেজেগোবরে অবস্থা যুবদলের
প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার
লেজেগোবরে-অবস্থা-যুবদলের
তিন বছর মেয়াদী ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১১৪ সদস্যের আংশিক কমিটি পায় সংগঠনটি। এরপর পেরিয়েছে আরো দুই বছর। এর মধ্যে আর কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্ব। যে কারণে পাঁচ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি পায়নি বিএনপির অন্যতম শক্তি যুবদল।
যুবদলের নেতাকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, পাঁচ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ার পেছনে সংগঠনের সভাপতি নিরব ও সাধারণ সম্পাদক টুকু দায়ী।
তাদের ব্যর্থতার কারণে সারাদেশের অন্তত ২০০টি ইউনিটের কমিটি গঠন করা যায়নি। পাঁচ বছর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি না করে বরং নতুন কমিটি করলে সংগঠনের কার্যক্রমে গতি ফিরবে বলেও মনে করেন তারা।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নির্দেশনায় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যুবদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। পাঁচ সদস্যের ওই কমিটিতে নিরব-টুকু ছাড়াও ছিলেন সহ-সভাপতি মোর্ত্তাজুল করিম বাদরু, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়ে গঠিত এ কমিটির মেয়াদ ছিল তিন বছর। মেয়াদ শেষের মাত্র এক মাস আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ২৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রস্তাবনা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে জমা দেওয়া হয়। যাচাই-বাছাই শেষে ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ১১৪ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি যুবদলের ১১টি সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়। তাদের সারাদেশের ৯৪১টি ইউনিটের কমিটি গঠন করে সংগঠনে গতি ফেরানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৭০০টি ইউনিটের কমিটি করা হয়। তবে ২০০টির বেশি ইউনিটের কমিটি গঠন বাকি রয়ে গেছে।
বিএনপি ও যুবদল সূত্রে জানা গেছে, দু-এক মাসের মধ্যে যুবদলের বাকি দুই শতাধিক ইউনিটের কমিটি দেওয়া হবে। এরপর যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ঈদুল ফিতরের পর কমিটি করা হতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সহ-সভাপতি বলেন, নিরব-টুকুর নেতৃত্বের ব্যর্থতায় যুবদল পাঁচ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি পায়নি। তাদের অদক্ষতা ও অযোগ্যতাই মূল কারণ। পাঁচ বছরে যেসব ইউনিটের কমিটি হয়েছে, সেখানে আর্থিক লেনদেন ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। সংগঠনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির চেয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জোরাল।
দলীয় সূত্রমতে, যুবদলের আগামী কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দুটি ফরম্যাট ভাবা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে দলের সিনিয়রদের নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বা আংশিক নিয়মিত কমিটি করার সম্ভাবনা খুব বেশি। তবে জুনিয়র নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি করার সম্ভাবনাও রয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং সারাদেশের দুই শতাধিক ইউনিটে কমিটি করতে না পারার বিষয়ে আলাপ করলে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু বলেন, অতীতের কমিটিগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, আমরা যতগুলো কমিটি করেছি, অন্যরা তা পারেনি। সংগঠন গোছানোর ক্ষেত্রেও আমরা সফল। বর্তমান কমিটি পূর্ণাঙ্গ হবে নাকি নতুন কমিটি গঠন করা হবে, সে বিষয়ে আমাদের অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিদ্ধান্ত দেবেন।
শিগগির পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে জানিয়ে যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নিরব বলেন, আমাদের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে নাকি নতুন কমিটি হবে, সে বিষয়ে হাইকমান্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে আমরা নির্দেশনা মেনে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার কাজ করে যাচ্ছি। শিগগির পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারবো।