শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লবিস্ট নিয়োগে কল কাটি নাড়ছে মিন্টু

প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার

লবিস্ট-নিয়োগে-কল-কাটি-নাড়ছে-মিন্টু

লবিস্ট-নিয়োগে-কল-কাটি-নাড়ছে-মিন্টু

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে আন্তর্জাতিক অপপ্রচার গুলো হচ্ছে, লবিস্ট ফার্মকে অর্থ দেওয়া হচ্ছে, এর পেছনে নাটের গুরু হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু। 

আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং তার স্ত্রী-পুত্র যে বিদেশে বিপুল অর্থ পাচার করেছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে প্যান্ডোরা পেপারে এবং অবসর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিনি বিপুল অর্থের টাকা দিয়ে ট্যাক্স হলিডে সুযোগ নিয়ে কোম্পানি খুলেছেন। আর এই কোম্পানিগুলো মূলত ব্যবহার করছে তারেক জিয়াকে অর্থ প্রদান এবং বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মকে টাকা প্রদানের জন্য।

জানা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারের জন্য যে বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মগুলোকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সেই লবিস্ট ফার্মগুলোর টাকার একটা বড় অংশই আবদুল আউয়াল মিন্টু দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন দেশে যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সাইবার সন্ত্রাস চলছে সেই সাইবার সন্ত্রাসেও অর্থদাতা হলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। 

বিএনপি নেতারাই বলছেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু হলেন তারেক জিয়ার ক্যাশিয়ার। গত নির্বাচনের সময় বিএনপির পক্ষ থেকে যে ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে; সেই মনোনয়ন বাণিজ্যের পুরোটাই পরিচালনা করেছেন তিনি। বিভিন্ন নেতার কাছে মনোনয়ন বিক্রি করে টাকা আদায়, একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়ে টাকা আদায় ইত্যাদি করে তিনি শত কোটি টাকার বেশি লন্ডনে পাচার করেছেন বলে বিএনপি নেতারাই জানান।

গত নির্বাচনে বিএনপির যারা মনোনয়ন পাননি তাদের একাধিক ব্যক্তি বলেছেন, আবদুল আউয়াল মিন্টুর প্রস্তাব তারা মানেননি। এজন্যই তারা মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। মিন্টু সেই সময় মনোনয়নের বিনিময়ে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ চেয়েছিলেন। 

এই অর্থের পরিমাণ সর্বনিম্ন পাঁচ কোটি টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত ছিল। বিএনপি নেতা এহসানুল হক মিলনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা সেই সময় মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। আর এসবের নাটের গুরু হিসেবে বিএনপিতেই আবদুল আউয়াল মিন্টুর নাম উচ্চারিত হয়।

বর্তমানে তিনি বিভিন্ন দূতাবাসগুলোতে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারের গল্পগুলো আবার ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছেন। বিভিন্ন দূতাবাসের সঙ্গে তিনি বৈঠক করছেন এবং বাংলাদেশের দুর্নীতি, বিভিন্ন কেনাকাটায় অসঙ্গতি, গুম ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলছেন বলে জানা গেছে।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, মিন্টুর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে অর্থপাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও তিনি কেন আইনের আওতায় আসছে না, সেটি একটি বড় রহস্য। কারণ, এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিকভাবে যে দেশগুলোর সম্পর্কে অর্থ পাচারের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে; তার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। আর বাংলাদেশ থেকে যারা অর্থ পাচার করেছে; তাদের সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত। আর এদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি হলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু।

এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, তার স্ত্রী নাসরিন আউয়াল মিন্টু, পুত্র তাবিথ আউয়ালরা বিদেশে কোম্পানি খুলেছে এবং সেখানে অর্থ পাচার করেছেন। এই বাস্তবতায় এদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা দাবি করেছেন।