জামায়াতে কর্মকাণ্ড নিয়ে রহস্য
প্রকাশিত : ১০:০৫ এএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার
জামায়াতে-কর্মকাণ্ড-নিয়ে-রহস্য
জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কর্মসূচিতে নেই। বিএনপির সঙ্গে তাদের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি না থাকলেও জামায়াত যেমন গোপনে গোপনে বিভিন্ন কাজ করছে, ঠিক তেমনিভাবে বিএনপির সঙ্গেও জামায়াতের পর্দার আড়ালের গভীর সম্পর্ক রয়েছে বলেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন।
আর এ কারণেই জামায়াতের তৎপরতার বহুমাত্রিকতা ক্ষমতাসীনদের নতুন সংকটে ফেলতে চাইছে বলেও বিভিন্ন মহল মনে করছেন।
জামায়াতের সাম্প্রতিক তৎপরতা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রহস্যময়তা। জামায়াত এখন নিজে কোনো কাজ না করে বিভিন্ন সংগঠনের ভেতর থেকে কাজ করাচ্ছে বলেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জামায়াতের সবচেয়ে নিয়ন্ত্রিত সংগঠন হলো বিএনপি এবং বিএনপিকে জামায়াত আংশিক হলেও মাঠে নামাতে পেরেছে। জামায়াতের পরামর্শেই বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পুনঃ উচ্চারণ করছে।
বিএনপি নির্বাচন কমিশন প্রক্রিয়া থেকে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে রেখেছে জামায়াতের কারণেই।
যেহেতু জামায়াত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নয়, কাজেই রাষ্ট্রপতির সংলাপে জামায়াতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। একইভাবে নির্বাচন কমিশনের জন্য গঠিত সার্চ কমিটিও জামায়াতের কাছ থেকে নাম চায়নি। আর জামায়াত যেহেতু অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে সেজন্য এই ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করতে জামায়াত-বিএনপিকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা থেকে বিরত রাখে। জামায়াতের দ্বিতীয় পদক্ষেপ হচ্ছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ষড়যন্ত্র। বিভিন্ন লবিস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াত সক্রিয় প্রচারণা করছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আরো পড়ুন> ভোট চোররা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে: জাহাঙ্গীর কবির নানক
জামায়াত নিয়ন্ত্রিত এনজিও এবং বিদেশে জামায়াতের লবিস্টরা জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার শুরু করছে এবং এই অপপ্রচারের তারা মূলত গণতন্ত্র, মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ইত্যাদি ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসছে।
জামায়াত মনে করছে যে, আন্তর্জাতিকভাবে যদি এরকম চাপ সৃষ্টি করা যায়, তাহলে পরে সরকারকে চাপে ফেলা যাবে।
তৃতীয়ত, জামায়াত দেশীয় জঙ্গি সংগঠনগুলোকে আবার পুনর্বিন্যাস করছে এবং এগুলোতে অর্থায়ন করছে। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলোতে জামায়াতের নিয়ন্ত্রণ এখন আগের চেয়ে আরো সুদৃঢ় হয়েছে এবং এই সংগঠনগুলোকে নতুনভাবে সক্রিয় করার জন্য জামায়াতের অব্যাহত চেষ্টা রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেপথ্যের কার্যক্রম আগের চেয়ে বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
চতুর্থত, জামায়াত ভারতবিরোধী একটি আবহ তৈরি করার চেষ্টা করছে এবং সীমান্ত হত্যাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে জামায়াত বাংলাদেশের জনগণকে ভারতবিরোধী করার ক্ষেত্রে উস্কানি দিচ্ছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে কর্নাটকের ঘটনাসহ বিভিন্ন ঘটনায় বাংলাদেশের মানুষ যেন ভারতের ব্যাপারে বিক্ষুব্ধ হয় এবং একটা ভারতবিরোধী মনোভাব এবং সাম্প্রদায়িক মনোভাব তৈরি হয় সেজন্য জামায়াতের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আর সর্বশেষ জামায়াত নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ এবং সদস্য সংগ্রহ অভিযান বৃদ্ধি করেছে। গত কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জামায়াত নেই। তাদের শীর্ষ নেতারা হয় গ্রেফতার না হয় পলাতক। কিন্তু এরমধ্যেই জামায়াত তৃণমূল পর্যন্ত তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।