আমার দরজা সবসময় খোলাই থাকে: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
দৈনিক প্রভাতী
প্রকাশিত : ০৬:০০ পিএম, ২ ডিসেম্বর ২০১৮ রোববার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্যবসায়ীদের জন্য আমরা অনেক সুযোগ করে দিচ্ছি। আর আমার দরজাতো সবসময় খোলাই থাকে, কোনো প্রটোকল নেই, কিছু নেই। কোনো সমস্যা হলে নিশ্চিন্তে আমার সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। রোববার দুপুরে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের বলরুমে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ‘জাতীয় রপ্তানি ট্রফি’ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ৫৬টি প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া আর কেউ থামাতে পারবে না। আমরা একটা সিস্টেমে নিয়ে এসেছি। যেই আসুক, এরপরে আর কেউ কোনো বাধা দিতে পারবে না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের যে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি সেটা কাজে লাগিয়ে আপনারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
তিনি বলেন, গোটা বাংলাদেশ যাতে উন্নত হয়- সেই দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা সব সময় চাই, আমাদের দেশটা এগিয়ে যাক। শিল্পায়ন ছাড়া কোনো জাতির অর্থনৈতিক উন্নতি হয় না। এ লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইপিজেড তৈরি করে দিচ্ছি। সমগ্র বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দেওয়ার কথাও তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন। আমাদের সরকার ব্যবসা বাণিজ্য করতে ক্ষমতায় আসে না। আর আমি তো ব্যবসাটা বুঝিও না। আমরা সরকারে এসে ব্যবসা-বাণিজ্যটা যাতে ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ হয় সেই ব্যবস্থাটা করে দেই।
এ বিষয়ে সরকারের টানা মেয়াদে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন, ইতোমধ্যে অনেকে আমাদের শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে, জিএসপি সুবিধা দিয়েছে। অন্তত আমি এইটুকু দাবি করতে পারি, যেখানেই আলাপ করেছি সাথে সাথে এই সুযোগগুলো পেয়ে গেছি। কিন্তু আমাদের রফতানিযোগ্য পণ্য বাড়াতে হবে। জিএসপি সুবিধা পাওয়ার পর থেকে বহু দেশের সাথে আমাদের সমঝোতা হয়েছে এবং পণ্য যাচ্ছে। অন্যান্য দেশেও আমরা শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের ফলে সমগ্র বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য উন্মুক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যারা কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী, এটা শুধু ছেলেই না, ছেলে-মেয়ে উভয়েই আমাদের শিল্পে শ্রম দিচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েরা তো এখন বেশি এগিয়ে এসেছে। তাই আরও ভালোভাবে শিক্ষিত করে, ট্রেনিং দিয়ে একটা শক্তিশালী জনগোষ্ঠী সৃষ্টি করে তাদের শ্রম ও মেধা কাজে লাগিয়ে দেশকে আরও উন্নত করতে পারব। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি।
আমাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যা ছিল। ইতোমধ্যে আপনারা জানেন এলএনজি আমদানি শুরু করে দিয়েছি। ফ্লোটিং এলএনজি টার্মিনাল করা হয়েছে। কিন্তু আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি ল্যান্ড বেইজ এলএনজি টার্মিনাল করে দেবো। যাতে গ্যাসের আর কোনো সমস্যা কোথাও না থাকে। সেটার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। যাতে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও সুবিধা হয়। একটা শিল্প করতে গেলে যে সমস্ত চাহিদাগুলো থাকে, সেগুলো যাতে পূরণ করা যায় তার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি। সেই সাথে নতুন বাজার খুঁজে নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে চেষ্টা করা হচ্ছে, জানান শেখ হাসিনা।
আমি শুধু এইটুকুই বলব, আজকে আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট মজবুত। আমাদের যে উন্নয়ন প্রকল্প তার ৯০ ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা অর্জন করেছি এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। উন্নত দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। বাংলাদেশকে আমরা উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এই দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নত দেশ হবে বাংলাদেশ- সেই পরিকল্পনা নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা ২০২১, ২০৪১ এবং ২১০০ ডেলটা প্ল্যান হাতে নিয়েছি। এই ডেলটা প্ল্যান নেদারল্যান্ড সরকারের সাথে যৌথভাবে বাস্তবায়ন করব। যার ফলে বাংলাদেশের এই এগিয়ে যাওয়া আর কেউ থামাতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেশ-বিদেশে ঘোরেন, আপনারাও খুঁজে বের করেন কোন দেশে কোন কোন পণ্যটা আমাদের দেশে উৎপাদন করে সেটা রফতানি করতে পারি। বাজারকে খুঁজে নেওয়া এবং পণ্যটাকে তৈরি করা, সেটাও কিন্তু আপনাদেরও একটা দায়িত্ব। সেই ক্ষেত্রে যদি কোনো রকম সহযোগিতা লাগে, অবশ্যই সরকার হিসাবে আমরা তা করব। যদিও সময় এখন সীমিত। আগামীতে ইলেকশন, কী হবে বলতে পারি না! যতক্ষণ আছি ততক্ষণে যা যা প্রয়োজন সেটা করে দিতে পারব, সেইটুকু কথা দিতে পারি।